নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনছার উল্যাকে (৬৫) মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের চরকাঁকড়া গ্রামের মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের বাড়িতে কুলকানি অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। কাদের মির্জা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র।
ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা আনছার উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বুধবার দুপুরের দিকে তিনি বসুরহাট পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমেরিকা প্রবাসী মরহুম দর্জি ওবায়দুল হকের কুলখানি অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেয় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। তিনি তাকে ওই অনুষ্ঠানে আসতে দেখে বসা থেকে উঠে অন্য একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় কাদের মির্জা কতক্ষণ ওই স্থানে বসে থাকে। এরপর আমার দিকে এগিয়ে এসে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাকে বলে আপনি কাজটা ভালো করেছেন না। তাকে আমি বলি আমি কাজ ভালো করতেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি তার সমর্থিত প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলি যে গত বার আমার ৯টা কেন্দ্র দখল করে নিয়ে গেছে। আমি বুঝি তার ভোট করব? তাকে ভোট দিতে বলব। তখন মির্জা আমাকে বলে তোমরাও মওদুদের জন্য ভোট চুরি করছো। তখন আমি মির্জাকে বলি আমি কখনো মওদুদের জন্য ভোট চুরি করিনি। আমরা একবার মওদুদের জন্য ভোট করেছি তিনি ফেয়ার ভোটে এমপি হইছে। এই কথার পরে মির্জা আমাকে ভোট চুরি করছি বলে মুখে থাপ্পড় মেরে দেয়। থাপ্পড়ের সাথে সাথে আমার চোখের চশমা চোখ থেকে খুলে মাঠিতে পড়ে যায়। আমার মুখ ছিরে যায়। এরপর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর আরো উত্তোজিত হয়ে উড়ে এসে আবার আমাকে আরেক থাপ্পড় দিয়ে গায়ে থেকে আমার চাদর ফেলে দেয়।
বিএনপি নেতা আনছার উল্যাহ বলেন, কাদের মির্জার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। সে আমার শ্বশুরদের আত্মীয়তার দিক থেকে আমার দূর সম্পর্কের শ্বশুর হয়। কোম্পানীগঞ্জে সপ্তম ধাপে ৮টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে কাদের মির্জা রামপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার চৌধুরীকে সমর্থন দেয়। ইকবাল চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কাদের মির্জার আপন ভাগনে সিরাজিস সালেকিন রিমন আনারস প্রতীক নিয়ে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ইকবাল বাহার চৌধুরীর সাথে গতবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। সে জোর করে ৯টি কেন্দ্র দখল করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। আমি সরাসরি রিমনের কোন ভোট করছি না। কারণ আমাদের দল থেকে ভোট করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমি বলতেছি ভোট চোরকে ভোট দিবেন না। এটা রিমনের পক্ষেও যেতে পারে, এ ছাড়া আরো প্রার্থী আছে তাদের পক্ষেও যেতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের মির্জার ভাগনে রামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সিরাজিস সালেকিন রিমন বলেন, আমার ভোট করায় উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনছার উল্যাহকে মারধর করে কাদের মির্জা। এ ঘটনা শুনতে পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি তাকে দেখতে যাই। ভুক্তভোগী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার সমর্থককে মারধর করায় আজ সন্ধ্যায় রামপুর ইউনিয়নের বামনী বাজারে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে সন্ধ্যা ফোনে ৬টার দিকে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন জানান, ঘটনাটি আমি মৌখিক ভাবে শুনেছি। ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ