রাজনীতি

উত্তপ্তের পথে রাজনীতির মাঠ, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

মোহাম্মদ রুবেল: নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পদত্যাগের দাবি এবং খালেদা জিয়ার কারাবন্দীর তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী বিএনপির ঢাকা সমাবেশসহ বিভিন্ন দাবিকে কেন্দ্র করে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের পাল্টা-পাল্টি বক্তব্যে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনীতির ময়দান।

শেষ পর্যন্ত বিএনপির সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের মাঠে নামার ঘোষণায় দলের কথার লড়াই গড়ালো রাজনীতির মাঠে। সাফ ঘোষণা রাজনীতির মাঠে হার্ডলাইনে থাকবে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। বিএনপির কর্মসূচিতে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। একচুল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ আগেভাগেই মাঠ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়ে চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে কেন্দ্রথেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে সমাবেশ, জনসংযোগের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ স্ব-স্ব বিভাগের কর্মসূচি সমন্বয় করবেন। দেশের সকল মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এসব কর্মসূচি গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এনিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বিরাজ করছে স্থিতিশীলতা। ঠিক তখনিই বিএনপি কর্মসূচির নামে সহিংসতা ছড়িয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের সহিংস হয়ে ওঠার অপচেষ্টা করছে। অহেতুক রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। তাদের কর্মসূচি মানেই সন্ত্রাস ও সহিংসতা ছড়ানো। এসব সহিংসতা রুখে দিতে কেন্দ্রথেকে শুরুকরে তৃণমূলের সকল নেতাকর্মী মাঠে থাকার আহ্ববান জানিয়েছেন।

বিএনপির কাছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের অর্থই হচ্ছে তাদেরকে নির্বাচনে জয়যুক্ত করে দেওয়ার গ্যারান্টি। তারা ক্ষমতায় থাকতে বার বার নির্বাচনের কফিনে গণতন্ত্রের লাশ উপহার দিয়েছে এমনটি বলেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল, সেই ফ্রন্ট ছিল ক্ষমতা ভাগাভাগির ফ্রন্ট উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পারস্পরিক অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতায় কাদা ছোঁড়াছুড়ি, আর একজন আরেকজনকে বহিষ্কারই সে ফ্রন্টের সফলতা ছিল। এখন আবার তারা জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, আসলে বিএনপির নেতৃত্বে মোর্চা গঠন জাতীয় ঐক্যের মুখোশের আড়ালে ক্ষমতা ভাগাভাগির ফ্রন্ট।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান সাননিউজকে বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক মাঠের ঠাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগেও যেকোন ষড়যন্ত্র ও নাশকতায় মোকাবেলায় রাজনীতির মাঠেছিল আগামীতেও থাকবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক সাননিউজকে বলেন, মাঠের রাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার মত সুযোগ দেবে না আওয়ামী লীগ। যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় হার্ডলাইনে থাকবে আওয়ামী লীগ ও তার সরকার।

আরেকদিকে বিএনপির ডাকা সভাসমাবেশকে শক্ত হাতে দমন করার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হুমকির জবাবে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলছেন, সভাসমাবেশের কথা শুনে বিচলিত হয়ে পড়েছেন ওবায়দুল কাদের। জনসমাবেশ করা রাজনৈতিক দলগুলোর সংবিধান স্বীকৃত। সংবিধান স্বীকৃত কর্মসূচি বিএনপি পালন করবেই। তাই হুঙ্কার দিয়ে লাভ নেই।

তিনি বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনরোষের ভয়ে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা ঘরে বসে হুঙ্কার দিচ্ছেন। বিএনপির সমাবেশের কথা শুনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েছেন। আপনাদের জারিজুরি সব ক্রমাগতভাবে ফাঁস হচ্ছে।জনগণের নিকট পরিস্কার হয়ে গেছে-বর্তমান শাসন সম্পূর্ণরূপে গণতন্ত্রবিবর্জিত এবং মাফিয়াদের দ্বারা পরিচালিত। গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে সভা-সমাবেশ করা। আর সেই সভা-সমাবেশ বন্ধ করার হুমকি কোন রাজনৈতিক নেতা দিতে পারেন না, সেটি কেবল মাফিয়ারাই দিতে পারে।

অপরদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারকে এ সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী ও পক্ষের রাজনৈতিক আন্দোলনও মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষ করে সরকারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মোকাবিলা করতে হতে পারে। ফলে রাজনীতির মাঠ বিরোধী দল যেমন দখলে রাখার চেষ্টা করবে তেমনি সরকারকে চাপমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চাইবেন রাজনীতির মাঠ তাদের অনুকূলেই যেন থাকে।

রাজনীতির বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাজনীতির মাঠ স্বাভাবিকভাবেই মসৃণ থাকবে না। বিশেষ করে ভোটাধিকার না থাকায় নির্বাচন নিয়ে সংকট তৈরি হয়ে হয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারে আসা না আসা নিয়ে চিরাচরিত নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে। এখন সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে যে অবিশ্বাস তার সুষ্ঠু সমাধান না হলে রাজপথেই এই সমাধান হবে এটাই সব সময় দেখা যায়।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সান নিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠেই থাকবেন। সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো মাঠে নামলে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ ঘরে বসে থাকবে না। বিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ মোকাবিলা করবে।

তিনি বলেন, বিরোধী পক্ষ রাজনীতির মধ্যে থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করলে আওয়ামী লীগ কোনো বাধা দেবে না। তবে খারাপ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হলে তখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবেই তা মোকাবিলা করা হবে।

সান নিউজ/এমআর/এসএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি প্রকাশ

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আস...

কর্মস্থলে না এসেও বেতন তোলেন শিক্ষক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১৮মে) বেশ কিছু খেল...

মেঘনা নদীতে পাঙ্গাশ রক্ষায় অবৈধ চাই ধ্বংস 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় মেঘনা নদী থ...

মুন্সীগঞ্জে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোটগাঁ...

ওএমএস বিতরণে গাফলতি হলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সা...

পটল কেন উপকারী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পটল আমাদের দেশের পরিচিত একটি সবজি, যা খেতে...

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

জেলা প্রতিনিধি: বিচারের আগে মিডিয...

হোয়াটসঅ্যাপে আসছে পরিবর্তন

টেকলাইফ ডেস্ক: জনপ্রিয় যোগাযোগ মা...

মঙ্গলবার ১৫৭ উপজেলায় সাধারণ ছুটি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা পরি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা