মতামত

‘হ্যাপি হাইপোক্সিয়া’ কোভিডে এক নিরব ঘাতক

মো. আরমান হোসেন রনি

২৮ বছর বয়সী মি. সজীব চেয়ারে বসে গল্পের বই পড়ছিলেন। হঠাৎ চেয়ার থেকে পড়ে গিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে গেল তার অসাড় দেহ। ধরাধরি করে যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো তখন আর শরীরে প্রাণ নেই। করোনা টেস্টে জানা গেল, তার স্ত্রীসহ পরিবারের ৩ জন সদস্য করোনা আক্রান্ত। তবে কি করোনায় আকস্মিক মৃত্যু?

এই আকস্মিক মৃত্যুর কারণ এক নিরব ঘাতক ‘হ্যাপি হাইপোক্সিয়া’। কোভিড সময়ে অনেক পরিচিত একটি শব্দ। হাইপোক্সিয়া মানে শরীরের কোষে অক্সিজেন স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কম। হ্যাপি হাইপোক্সিয়া মানে আপনি খুব স্বাভাবিক, কিন্তু এইদিকে আপনার শরীরের ভেতরের অক্সিজেন কমে গিয়ে অংগ প্রত্যংগ গুলো নিস্তেজ করে দিচ্ছে। এক সময় অপুরনীয় ক্ষতি হয়ে গেছে যা থেকে ফিরে আসা সম্ভব না।

আমাদের শরীরে স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেন এর স্যাচুরেশান ৯৫% থেকে ১০০% এ ওঠানামা করে। এর নীচে নামলে বুঝতে হবে কোষে অক্সিজেনের স্বল্পতা শুরু হচ্ছে। হ্যাপি হাইপোক্সিয়াতে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকলেও তা জানান দেয় না।

প্রথমের দিকে মাথা ঘোরা, শ্বাস-প্রশ্বাসের কোনও সমস্যা হয় না। বাইরে থেকে রোগীকে দেখে মনে হতে পারে ঠিকই আছে, ‘হ্যাপি' সে। কিন্তু হঠাৎ করে অক্সিজেনের মাত্রা ৭৫ বা ৮০-তে নেমে যায়। আর তখনই শুরু হয়ে যায় শ্বাসকষ্ট, যা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই হ্যাপি হাইপক্সিয়া কে 'সাইলেন্ট কিলার'ও বলা হয়। কোভিডকালীন সময়ে কম বয়সীদের মাঝে এটি বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

অবাক করার বিষয় হল, কোভিড আক্রান্ত রোগী সাধারণ জ্বর নিয়ে বসে আছে, গল্প করছে বা মোবাইলে চ্যাট করছে কিন্তু এদিকে স্যাচুরেশান ৮০% হয়ে বসে আছে। উনি জানেনও না এবং তাঁর ন্যুনতম খারাপ বোধ হচ্ছেনা। এদিকে নাকের আগা, কানের লতি নীল হয়ে আছে। দীর্ঘক্ষন অক্সিজেন না পেয়ে হার্ট টা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হাসপাতালে স্বাভাবিক আচরনের রোগীর শরীরে পালস অক্সিমিটার বসিয়ে প্রায়ই স্যাচুরেশান ৮০%, ৭০% পাওয়া যাচ্ছে।

জিজ্ঞেস করলে রোগী বলে তাঁর কোন অসুবিধা লাগছেনা। কিন্তু এর কিছু সময় পরে কি হতে চলেছে উনি নিজেও আন্দাজ করতে পারছেন না। তাই জ্বর, গলা ব্যাথার রোগী একটা পালস অক্সিমিটার সাথে থাকলে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা অন্তর একটু দেখে নিলে নিশ্চিত থাকা যায়। সাধারণ অবস্থায় মাপার দরকার নেই। ৯৩% এর নীচে আসলে আগেই সতর্ক হয়ে ডাক্তার এর দ্বারস্থ হওয়া যায়, বা হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

হ্যাপি হাইপোক্সিয়া করোনা সংক্রমণের একটা অবাক করা বিষয়। শ্বাস নিতে পারছেন, কিন্তু সেই অক্সিজেন রক্তে পৌছাচ্ছেনা । তাই কোষও অক্সিজেন পাচ্ছেনা। আর বোঝাও যাচ্ছে না কোন উপসর্গ না হওয়ার কারনে। তাই জ্বর, মাথা বা গলা ব্যাথার রোগীর একটা পালস অক্সিমিটার থাকা জরুরি। কোভিড এর রিপোর্ট আসার আগেই করোনার উপসর্গ যুক্ত রোগী আংগুলে লাগিয়ে মাঝে মাঝে দেখলে সচেতন থাকা যায়।

লেখক, মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন।

সান নিউজ/এমএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, প্রধানম...

আবেদনময়ী লুকে নুসরাত

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চলচ্চিত্র চিত্রনায়িকা নুসরাত...

খাগড়াছড়িতে শাশুড়ি হত্যায় জামাতা আটক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে জুয়া খেলতে...

৬ তারিখে বাজেট প্রস্তাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন, ৬...

গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই সুরক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মান...

বাক-বিতণ্ডার জেরে নিহত ১

উপজেলা প্রতিনিধি: সাভার জেলার আশু...

হিমাগারে মজুত ১ লাখ ডিম

জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া সদরে &lsquo...

নিখোঁজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি : চাঁদপুরে নিখোঁজ হওয়ার পর ডাকাতিয়া নদী থেকে...

কিরিগিজস্তানে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাওয়া নিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি,...

ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে চলমান...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা