আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার দেশ মরক্কোয় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩২ জনে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : মরক্কোতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ২৯৬
শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) মরক্কোর রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল আল আওলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এরআগে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে হওয়া ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দেশটি। যা ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।
ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার প্রথম ৯ ঘণ্টাতেই ৬৩২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ রাত পেরিয়ে দেশটিতে মাত্র সকাল হয়েছে। আর এখনই শুরু হবে আসল উদ্ধার অভিযান।
আরও পড়ুন : নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন বাইডেন
রাতের বেলা রাজধানী রাবাতসহ উপকূলীয় শহর কাসাব্লানকা এবং এসোরিয়াতেও শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেন সাধারণ মানুষ।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী মারাখেস শহর। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে সেখানকার অসংখ্য বাড়ি-ঘর ধসে পড়েছে। আর সেগুলোর নিচে চাপা পড়ে বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভূমিকম্পের পরপরই মারাখেসে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ভূমিকম্পের ফলে অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। এই কারণে ধুলোর মেঘ তৈরি হয়। হতবাক বাসিন্দারা নিরাপত্তার জন্য, স্থানীয় ভবনের বাইরে এবং রাস্তায় দৌড়াচ্ছে। সারারাত মানুষ রাস্তায় রাত কাটায়।
আরও পড়ুন : পারমাণবিক সাবমেরিন উদ্বোধন কিমের
মারাখেসের স্থানীয় বাসিন্দা হুদা ওতাসেফ বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি রাস্তায় হাঁটছিলেন। তিনি এবং তার পরিবারের কাছের সদস্যরা ঠিক আছেন। কিন্তু তার দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে অন্তত ১০ জন ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘এটি পুরোপুরি বিষ্ময়কর একটি পরিস্থিতি ছিল। আমরা ভালো এবং সুস্থ আছি, কিন্তু আমি এখনো আতঙ্কে আছি। আমার পরিবারের অন্তত ১০ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আমি এটি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না, দুই দিন আগে তারা ছিল, আজ তারা বেঁচে নেই।’
আরও ভূমিকম্প সংঘটিত হতে পারে, এমন আতঙ্ক থেকে সারারাত রাস্তাতেই অবস্থান করেন সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন : জি-২০ তে যোগ দেবেন না পুতিন
মারাখেসের অপর এক বাসিন্দা ফয়সাল বাদুর জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের সময় তিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু চলন্ত অবস্থাতেই বুঝতে পারেন কি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তার দেশ।
তিনি বলেছেন, ‘আমি গাড়ি থামিয়ে বুঝতে পারি কি ভয়াবহ বিপর্যয় এটি ছিল। চিৎকার-চেঁচামেচি ও কান্নার শব্দ… অসহনীয় ছিল।’
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর যেসব মানুষ বাইরে বের হয়েছিলেন তারা কেউ আর রাতে বাড়িতে অবস্থান করেননি। এর বদলে বাড়ি থেকে শীতের কাপড় নিয়ে চলে আসেন এবং আরও ভূমিকম্পের ভয়ে সারারাত রাস্তাতেই কাটান।
আরও পড়ুন : মিয়ানমারে সংঘর্ষ, ৫০ জান্তা সেনা নিহত
এদিকে মরক্কোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব জিওফিজিক্সের প্রধান জানিয়েছেন, মরক্কোতে আঘাত হানা শনিবারের ভূমিকম্পটি এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।
এর আগে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টার কিছু পরে ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডেনের স্কি রিসোর্টের কাছে, যা মারাকেশ থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে। সূত্র: আরব নিউজ
সান নিউজ/জেএইচ