আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে জঙ্গি উৎখাতে ২০ বছর যুদ্ধ করেও কোনো কূল-কিনার করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। অবশেষে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে দেশ ছেড়েছে মার্কিনীরা। ২০ বছরের এই যুদ্ধে নিজেদের পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মিলে।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্ট্যান্ডিং কমিটি হাউস আর্মড সার্ভিসেস কমিটির কাছে স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মিলে বলেন, এটি সবার কাছে পরিষ্কার, আমাদের মনমতো আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি হয়নি।
‘বিদ্রোহীরা ফের ক্ষমতায় আসুক, এটা আমরা চাইনি।’
আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার ও দেশি-বিদেশি নাগরিকদের উদ্ধার কার্যক্রমে কাবুল বিমানবন্দরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে মিলে বলেন, আফগান যুদ্ধে আমরা কৌশলগতভাবে ব্যর্থ হয়েছি।
‘এ পরাজয় শেষ ২০ দিন এমনকি ২০ মাসেও হয়নি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল মিলে বলেন, একের পর এক ভুল কৌশলগত সিদ্ধান্তের প্রভাব পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আল কায়েদার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে আমরা সফল হয়েছি। তবে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করলে বলতেই হবে, আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি একেবারে ভিন্নভাবে হয়েছে, যা আমরা চাইনি।
তিনি বলেন, আফগান যুদ্ধ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। কেন আমাদের পরাজয় হয়েছে, তা মূল্যায়নের সময় এসেছে।
আফগান যুদ্ধে পরাজয়ের কারণ হিসেবে নিজের কয়েকটি পর্যালোচনা তুলে ধরেন মিলে।
২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের পরপরই আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরা বা হত্যা করার সুযোগ হারানো পরাজয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন মিলে।
এ ছাড়া ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ আফগান যুদ্ধে হারের আরেক কারণ বলে মনে করছেন মিলে।
তিনি বলেন, ওই আক্রমণের সময় আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ইরাকে স্থানান্তরিত করা হয়। এতে তালেবানের আশ্রয়দাতা পাকিস্তানকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি।
চলতি বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা আফগানিস্তান থেকে সরানোর নির্দেশ এপ্রিলে দেন বাইডেন।
বাইডেনের উপদেষ্টা মিলে ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল কেনেথ মেকেনজি মঙ্গলবার সিনেটের এক কমিটিকে জানান, আফগানিস্তানে আড়াই হাজার সেনা রেখে দেয়ার সুপারিশ তারা ব্যক্তিগতভাবে করেছিলেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এ বিষয়ে বলেন, আফগানিস্তান নিয়ে কী করা উচিত, এ বিষয়ে বিভক্ত পরামর্শ বাইডেনকে দেয়া হয়।
সেনাপ্রধানকেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। দুই দশকের যুদ্ধ বন্ধে তার নেয়া সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
সান নিউজ/এফএআর