আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের মিশ্র প্রতিষেধক (ককটেল টিকা) করোনার বিরুদ্ধে ভালো প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলছে। ভারতের উত্তরপ্রদেশে ২০ জনকে ভুলবশত দু’টি আলাদা আলাদা সংস্থার টিকা দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও পরে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল দাবি করেছিলেন, ওই ব্যক্তিরা দু’ধরনের প্রতিষেধক নিলেও তাদের শরীরে কোনও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই।
পরে কেন্দ্র স্থির করে মিশ্র প্রতিষেধকের ব্যবহারে কারও শরীরে করোনা সংক্রমণ রুখতে সার্বিক ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেই মতো পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করার পরিকল্পনাও করে তারা।
গত মে এবং জুনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে এই সমীক্ষা চালায় আইসিএমআর। কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের মিশ্রণ প্রয়োগ করা হয়। সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, এই মিশ্র প্রতিষেধক শুধু নিরাপদই নয়, সার্স কোভ-২ এর বিভিন্ন রূপের বিরুদ্ধেও ভালো প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম।
যদিও গত মাসেই এই মিশ্র প্রতিষেধকের বিষয়টি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন। তিনি এই দুটি টিকার মিশ্রণের প্রয়োগকে ‘ভয়ানক প্রবণতা’ বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। কেননা এই ধরনের প্রয়োগের বিষয়ে খুব সামান্য তথ্যই পাওয়া গিয়েছিল বলে মত ছিল তার।
এদিকে, ভারতে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পর এবার ভাইরাসটির আরেকটি স্ট্রেইন শনাক্ত হয়েছে। দেশটির দুই রাজ্য মিজোরাম ও কর্নাটকে ইটা নামের এই ভ্যারিয়েন্টের সন্ধান মিলেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কর্নাটকের কর্তৃপক্ষ। তবে রাজ্য সরকার বলছে, করোনার ইটা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এখনও চিন্তার কিছু নেই।
দুই সপ্তাহ আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মেঙ্গালুরুর এক বাসিন্দা। এরপর তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। পরে জানা যায়, তিনি করোনার ইটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। যেহেতু ভাইরাসের রূপ জানতে জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে সময় লাগে। তাই ইটার উপস্থিতি জানতে কিছুটা সময় লেগেছে।
ভারতে এই ভ্যারিয়েন্টের প্রথম সন্ধান মিলে মিজোরামে। সেখানে অবশ্য এই সংক্রমণ ছড়ায়নি। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে কর্নাটকেও একই স্ট্রেইন শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বে প্রথম ইটা সংক্রমণের খবর মেলে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে কোনও একটি নির্দিষ্ট দেশে এই সংক্রমণ শুরু হওয়ার কথা বলা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এখনও চিন্তার কিছু নেই। লোটা, কাপ্পা, ল্যামডা, আলফা, বিটা, গামা ও ডেল্টা এখন নজরে রয়েছে। ইটা সেই তালিকায় নেই। যদিও নাইজেরিয়াতে করোনার এই রূপ ইতোমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবুও এখনই একে মারণ রূপ বলে মানতে নারাজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এর আগে, ভারতে শনাক্ত হয় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। যা সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা মোদি সরকারের। দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া এ ভ্যারিয়েন্ট ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরইমধ্যে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এর মধ্যেই নতুন ভ্যারিয়েন্টের খবর প্রকাশিত হলো।
সান নিউজ/এমএম