আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম মডার্নার একদল গবেষক ক্যান্সার, হার্টের রোগ এবং অটোইমিউনের কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। যা বাঁচাতে পারে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ।
আরও পড়ুন : হামলাকারীদের স্থান হবে কবরে
গবেষকরা জানান, তাদের আশা ২০৩০ সালের মধ্যেই তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত হবে। এটি তৈরির প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সাফল্য পাওয়া গেছে।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছেন তারা। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন ১২-১৮ মাসে মধ্যে। কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার সময় এই ভ্যাকসিন তৈরিতে গতিশীলতা আসে।
আরও পড়ুন : আতঙ্কে গ্রাম ছেড়েছে ১৯৫ পরিবার
মডার্নার প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পল বার্টন বলেন, তাদের আশা আগামী ৫ বছরের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিনের মতো সব ধরনের রোগের চিকিৎসা মানুষকে তারা দিতে পারবেন।
সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের কার্যকরী ভ্যাকসিনগুলোর মধ্যে মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। বর্তমানে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন : পদ্মা সেতুতে উল্টে গেল অ্যাম্বুলেন্স
ডাক্তার পল বার্টন জানান, আমাদের কাছে এ ভ্যাকসিন থাকবে এবং এটি খুবই কার্যকরী হবে। ভ্যাকসিনটি কয়েক কোটি মানষের জীবন রক্ষা না করলেও কয়েক লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করবে। আমরা আমা করি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ভ্যাকসিন দিতে পারব আমরা।
তিনি আরও বলেন, মাত্র একটি ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই শ্বাসতন্ত্রের একাধিক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে। এছাড়া দুর্বল মানুষ করোনা, ফ্লু এবং শ্বাসতন্ত্রের সিনসিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে রক্ষা পাবেন।
আরও পড়ুন : ১ লাখ ১৯ হাজার ২১২ জন নিবন্ধিত
যেসব বিরল রোগের কোনো ওষুধ এখনো বের হয়নি, সেগুলোতে এম-আরএনএ থেরাপি ব্যবহার করা যাবে। এম-আরএনএ থেরাপি শরীরের কোষগুলোকে জানান দেয় কীভাবে প্রোটিন তৈরি করা হয়, যেটি শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচল করে।
ডাক্তার বার্টন জানান, আমি মনে করি যেসব রোগের ওষুধ এখনো তৈরি হয়নি, সেসব রোগ সারিয়ে তুলতে আমাদের কাছে এম-আরএনএ ভিত্তিক থেরাপি থাকবে।
আরও পড়ুন : অটোরিকশা চালককে গলা কেটে হত্যা
এখন থেকে ১০ বছর পর আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছা, যে সময় সত্যিকার অর্থে রোগের জেনেটিক কারণ খুঁজে বের করতে পারব, এম-আরএনএ ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেটি সারিয়ে তুলতে পারব। তবে বর্তমানে যে গতিতে এ কার্যক্রম এগিয়ে চলছে, এটি ধরে রাখতে হলে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না পাওয়া গেলে পুরো বিষয়টিই বৃথা যাবে।
যেভাবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করবে-
আরও পড়ুন : তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
এম-আরএনএ অণু শরীরে কোষগুলোকে প্রোটিন উৎপাদন করার জন্য নির্দেশ দেয়। সিনথেটিক আকারে এটি শরীরে পুশ করলে রোগ প্রতিরোধে আমাদের যে প্রোটিন প্রয়োজন সেটি উৎপন্ন হয়।
একটি এম-আরএনএ ভিত্তিক ক্যান্সার ভ্যাকসিন শরীরের ভেতর যে ক্যান্সারের কোষগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেটিকে ধরে ফেলে ইমিউন সিস্টেমকে সতর্ক করে দেবে। এরপর এটি ক্যান্সারের কোষগুলোর ওপর হামলা চালাবে ও ধ্বংস করে দেবে। এ সময় শরীরের ভালো কোষগুলোর কোনো ক্ষতি করবে না এটি।
আরও পড়ুন : তথ্য দিতে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ লাইন
ভ্যাকসিনটি ক্যান্সার কোষগুলোর ওপর প্রোটিনের যে খণ্ড থাকে সেগুলো খুঁজে বের করবে। যেগুলো ভালো কোষে থাকে না এটি ইমিউন সিস্টেমকে সচল করবে। এরপর এম-আরএনএ এর টুকরো তৈরি করবে যেটি শরীরকে নির্দেশনা দিবে কীভাবে এ প্রোটিন উৎপন্ন করতে হয়।
প্রথমত, ডাক্তাররা রোগীর ক্যান্সার টিউমারের বায়োপসি করবেন ও এটি ল্যাবে পাঠাবেন। এরপর ল্যাবে এর জেনেটিক মিউটিশন খুঁজে বের করা হবে, যেটি ভালো কোষে থাকে না। এরপর অ্যালগরিদম খুঁজে বের করবে কোন মিউটিশনটি শরীরে ক্যান্সার বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি এটি খুঁজে বের করবে কোন প্রোটিন ইমিউন সিস্টেমকে সচল করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন : বরিশাল প্লাজার আগুন নিয়ন্ত্রণে
এরপর সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে কার্যকরী এন্টিজেন তৈরি করে বিশেষ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হবে।
ডাক্তার বার্টন বলেছেন, আগে তাদের ধারণা ছিল এম-আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধুমাত্র সংক্রমণজনিত রোগগুলোর চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু এটি ক্যান্সার, হার্টের রোগ, অটোইমিউন সমস্যা এবং বিরল রোগের চিকিৎসায়ও দারুণ ভূমিকা রাখে।
খবর : দ্য গার্ডিয়ান
সান নিউজ/এনজে
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            