স্বাস্থ্য

করোনাকালীন শীতে রোগ শঙ্কা কাটাতে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক : শীত মৌসুম শুরু হলেই বয়স্ক এবং শিশুদের মাঝে অজ্ঞাত রোগ বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এর প্রভাব বাংলাদেশের শীত মৌসুমে পড়ার আশঙ্কা করছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। উভয় রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ প্রায় কাছাকাছি। ফলে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

এক্ষেত্রে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসার সঠিক নির্দেশনার জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে হবে। এজন্য সময় ও খরচ কমাতে সারাদেশে দ্রুত অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু করা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তারা উভয় রোগ থেকে রক্ষায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।

দীর্ঘ নয় মাস দেশে করোনা মহামারী অবস্থা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে দেশে শীত চলে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মৌসুমে তাপমাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত জীবাণুগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়। ফলে শীতে মানুষ সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিলাইটিস, ব্রংকিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, বাত, আর্থ্রাইটিস, চামড়ার শুষ্কতার মতো রোগে আক্রান্ত হয়। এসব রোগ থেকে সুরক্ষায় শীত এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, শীত যেহেতু আসছে তাই শীতের রোগও ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। স্বাভাবিক শীতকালীন রোগব্যাধির পাশাপাশি করোনা আতঙ্ক তো রয়েছেই। এই সময়ে রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

তিনি বলেন, সমন্বিতভাবে করোনা ও শীতজনিত রোগ মোকাবেলা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে করোনা রোগের কথা মাথায় রেখে চিকিৎসার কথা চিন্তা করতে হবে। তাই বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় হঠাৎ করেই শীত পড়ে গেছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার একটু আগে শীত আসায় ঠাণ্ডা জনিত রোগ দেখা দিয়েছে বয়স্ক এবং শিশুদের। এতে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমে এর তথ্য নেই। তারা নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শীতজনিত রোগের পরিসংখ্যান নেয়া শুরু করে।

বিগত বছরগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মৌসুমে দৈনিক সারা দেশে প্রায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায়, এআরআই-এ (একিউট রেসপারেটরি ইনফেকশন) এবং অন্যান্য রোগই (জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ এবং জ্বর) বেশি।

এদিকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার ১৮৪২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে, যা ছিল গত ৫৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এদিন ১৭ জনের মৃত্যু হয়। বুধবার দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়ায়। ওইদিন দেশে ২১ জনের মৃত্যু হয়। নতুন করে শনাক্ত হয় ১৬৫৯ জন। মঙ্গলবার প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন ১৭৩৬ জন, মারা যান ২৫ জন।

এ প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, শীতজনিত রোগের লক্ষণ ও করোনার লক্ষণ প্রায় একই রকম। এক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণযুক্ত সব রোগীর সুচিকিৎসা ও নিরাপত্তায় কোভিড পরীক্ষা করতে হবে।

এক্ষেত্রে আরটিপিসিআর পরীক্ষায় যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনি ব্যয়বহুল। তাই এ ধরনের জটিলতা সৃষ্টির আগেই যত দ্রুত সম্ভব সারা দেশে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু করতে হবে। পাশাপাশি পুরনো এ্যজমা রোগীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকে, যা এই সময় মারাত্মক পর্যায়ে যেতে পারে। তাই তাদের চিকিৎসায় চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট- আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ড. মোশতাক হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ এর সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ সাদৃশ্যপূর্ণ। তবে বাংলাদেশে শীতকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা হয় না। এই সময়ে ঠাণ্ডা, কাশি এমনকি নিউমোনিয়ার মতো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যায় বয়স্ক ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হন। তাই এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। উদাসীন না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ধরনের সংক্রমণ থেকে অনেকটা নিরাপদে থাকা সম্ভব।

সান নিউজ/এসএ/এস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন ও মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানি পেছাল

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্য...

খাতিরের ঠিকাদারকে কাজ দিতে ডিএনসিসির দরপত্রে ‘কারসাজি’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বাতি স্থাপনের কাজ ‘খাতিরের’...

মেসি ফিরলেন, গোল করলেন, দলকেও জেতালেন

পুরো ম্যাচ খেলেননি, বদলি নেমে মাঠে ছিলেন ৪৫ মিনিট। ম্যাচের এই অর্ধেক সময়েই ব্...

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফই বলেছিলেন নির্বাচন করতে, দাবি ফারুকের

সরকারের ‘পছন্দে’র মানুষ হিসেবে ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড...

বিদেশের বাংলাদেশি সব কূটনৈতিক মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলে...

চিকিৎসক নেতা নারায়ণ হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বা...

ভরাডুবির ভয়ে কিছু খুচরা পার্টি নির্বাচন চাচ্ছে না: দুদু

নির্বাচন হলে যাদের ভরাডুবি হবে তারাই নির্বাচন চাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বি...

রিকশাচালককে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার, ধানমন্ডি থানার ওসির ব্যাখ্যা তলব

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার ক...

প্রধান উপদেষ্টা নিজে ক্লিয়ার করেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে: রিজওয়ানা

নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা...

জুলাই সনদে ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ অবস্থান অস্পষ্ট: ডেভিড বার্গম্যান

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়া পাঠিয়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা