সুন্দরবনের উপকূলে তীব্র ঠান্ডা ও গত তিন দিনের হিমশীতল শৈত্যপ্রবাহে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তীব্র শীতে দিনমজুর শ্রেণির মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় গত তিন দিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ, কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে বিপর্যয়। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ প্রচণ্ড শীতের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না। যাতায়াতে দূরপাল্লার নৌপরিবহনসহ যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল ২–৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে। শনিবার সকাল ১১টার পর সূর্যের আলো দেখা গেছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় নদীতীরবর্তী ছিন্নমূল মানুষের বসবাসে দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ঠান্ডাজনিত রোগে বিশেষ করে ডায়রিয়া, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ১৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর আগে অনেক রোগী চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
প্রচণ্ড শীতের কারণে পানগুছি নদীর তীরবর্তী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বারইখালী গ্রামের বৃদ্ধা শেফালী বেগম (৬৫)সহ একাধিক ছিন্নমূল পরিবারের মানুষের দুর্বিষহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। কথা হয় বৃদ্ধা শেফালী বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২৫ বছর আগে এ ভিটায় তাঁর স্বামী মারা যান। ছোট দুটি ছেলে-মেয়ে নিয়ে নদীর পাড়ে সেই থেকে বসবাস করছেন। কুঁড়েঘরে যাদের জীবন, তাদের আবার দুঃখ কিসের—ঝড়-বন্যা প্রতিবছরই পার করছি। গত তিন দিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাসে না ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছি।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগ—ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়ে গত তিন দিনে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এখনো ১৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো—ঠান্ডা ও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বিশেষ করে গরম কাপড় পরিধান, গরম খাবার গ্রহণ এবং বিশুদ্ধ পানি পান করা।
সাননিউজ/আরআরপি