সেই কবে মুক্তি পেয়েছিল ‘বেখুদি’। এরপর পেরিয়ে গেছে ৩৩ বছর। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকেই কাজল বলেছিলেন, মনে রাখার মতো সিনেমা করতে চান। তাঁর তিন দশকের ক্যারিয়ারে আলো ফেললে বলা যায়, তিনি কথা রেখেছেন। তাঁর সময়ের অনেক অভিনেত্রী এখন আর পর্দায় নেই। তবু কাজল কাজ করে যাচ্ছেন সমান দাপটের সঙ্গে, পুরুষপ্রধান বলিউডে এটা উজ্জ্বল ব্যতিক্রমই বটে। আজ ৫ আগস্ট, ৫১-তে পা দিলেন কাজল।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভুলভাল ছবিও করেছেন কাজল। তবে সে তুলনায় মনে রাখার মতো কাজই বেশি। কেবল ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’র জন্যই তো তাঁকে মনে রাখা যায়। তিনি ‘বাজিগর’ করেছেন, ‘গুপ্ত’, ‘ইশক’, ‘কুচ কুচ হোতা হ্যায়’, ‘কাল হো না হো’, ‘ফানা’, ‘মাই নেম ইজ খান’ করেছেন।
২০১০-এর পর ধাক্কা খান কাজল। বেশ কয়েকটি সিনেমা ফ্লপ হয়, সেই সময়ের হিন্দি সিনেমার সঙ্গে হয়তো তিনি মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। কাজের সংখ্যা অনেক কমিয়ে দেন। হয়তো ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরির জন্যই। ওটিটি আর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া সিনেমায় গত কয়েক বছরে আবার পাওয়া গেছে সেই পুরোনো কাজলের ঝলক।
সেটা ‘ত্রিভঙ্গ’, ‘সালাম ভেঙ্কি’, ‘হেলিকপ্টার এলা’, ‘দ্য ট্রায়াল’ই হোক। একমাত্র গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘দো পাত্তি’কে খরচের খাতায় ফেলা যায়, বাকি প্রকল্পগুলোতে ঠিকই দেখিয়েছেন নিজের অভিনয়ের ঝলক।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলেছেন কাজল। তিনি মূলত পরিচিত রোমান্টিক সিনেমার জন্য। তবে চলতি বছর ‘মা’ দিয়ে হরর সিনেমায় তাঁর অভিষেক হয়েছে। বক্স অফিসে ৫০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। হিন্দি সিনেমার মন্দার বাজারে বলা যায়, একা হাতে সিনেমাটি টেনেছেন কাজল।
মুক্তির আগে হরর সিনেমায় অভিষেক নিয়ে তিনি বলেন, ‘খুবই মজার অভিজ্ঞতা ছিল। তবে অভিনয়ের দিক থেকে বিশেষ আলাদা কিছু ছিল না। এ ছবির কাহিনি অবশ্য একদমই আলাদা। আর ছবিতে মায়ের লড়াই খুবই অন্য ধরনের। ছবিতে আমার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল অ্যাকশন করা। এ ছবিতে প্রচুর অ্যাকশন আছে। আর আমি প্রথমবার এমন করেছি, যা শারীরিকভাবে খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ ছবিতে প্রচুর ভিএফএক্সের ব্যবহার করা হয়েছে। তাই ভিএফএক্সের মধ্যে শুট করার অভিজ্ঞতাই ছিল আলাদা, একটু কঠিন ছিল এবং বিভ্রান্তিতে থাকতাম। ভিএফএক্স-নির্ভর ছবির শুটিং করার ধরন সম্পূর্ণ আলাদা হয়।’
এই সিনেমায় কাজলকে দেখা গেছে এক মায়ের ভূমিকায়। কাজল নিজে সন্তানের মা, ‘সালাম ভেঙ্কি’, ‘হেলিকপ্টার এলা’সহ অনেক ছবিতেই পর্দায় মায়ের চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে। মায়ের চরিত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘২২ বছর ধরে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। ফলে শরীরী ভাষা, অভিব্যক্তি, আবেগ—সবই সহজাত হয়ে গেছে। আমাকে শুধু হরর ঘরানায় নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে। পরিচালক বিশাল ফুরিয়ার ওপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা ছিল। হরর ঘরানায় ওনার দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই আলাদা।’
কাজল সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেভাবে নিজেকে বদলে নিচ্ছেন, তাই তাঁর নতুন আরও সিনেমার জন্য অপেক্ষা করাই যায়।
সাননিউজ/এসএ