ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ-অধ্যক্ষ খাইরুল বাশার
শিক্ষা
অধ্যক্ষ বনে গেছেন কোটি টাকার মালিক

ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ত্রিশালের ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজের অধ্যক্ষ খাইরুল বাশারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি, জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন : বিশ্ব সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান

অভিযোগে জানা যায়, খাইরুল বাশার প্রতারনা ও জালিয়াতের মাধ্যমে সম্পূর্ন অবৈধ পন্থায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ নিয়ে বসে আছেন। ইতিপূর্বে তিনি ভালুকা ফাজিল মাদ্রসায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে থেকে একই সময়ে ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব পালন করে প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সরকারী বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন।

ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিজের নিয়োগ নিজেই নিয়েছেন। পরিচয় দিয়েছেন পূর্নাঙ্গ অধ্যক্ষের। কলেজের এমপিও প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিজের মনগড়া তালিকা দিয়েছেন।

তিনি শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি মেনটেইন না করে জুনিয়র প্রভাষককে টাকার বিনিময়ে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেছেন। কলেজের নামে দানকৃত ১ কোটি টাকা মূল্যের ৩৭ শতক জমি হস্তান্তর করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন : জনগণই সব ক্ষমতার উৎস

অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে সহকারী ল্যাবরেটরি পদে তার আপন ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলামকে নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করে নিয়োগ দিয়েছেন। তার বেতন এমপিও ভুক্ত করনের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। সহকারী ল্যাবরেটরি পদে নিয়োগে চাওয়া হয়েছিল বিজ্ঞান বিভাগ। সাইফুল ইসলাম ছিলেন মানবিক বিভাগের। পরে জানা যায় তার এসএসসি সনদ ওই ভুয়া। এমপিওর তিন মাসের বেতনও উত্তোলন করেছেন সাইফুল ইসলাম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে খাইরুল বাশার নিজেই নিজেকে নিয়োগ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্বে থেকে পুর্নাঙ্গ অধ্যক্ষের পরিচয় দিয়েছেন সব জায়গায়। অধ্যক্ষ নিয়োগে গভর্নিং বডির সভায় খাইরুল বাশার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকলেও পুর্নাঙ্গ অধ্যক্ষ হিসেবে সাক্ষর করেছেন।

তিনি অধ্যক্ষ পদে অভিজ্ঞতার কোন সনদ না দেখিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে কলেজের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কলেজে ব্যাপক দূর্নীতে করে মোটা অংকের টাকা লুটে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন : ডনবাস যুদ্ধ হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো

কলেজের নামে ২০০ শতক জমি ছিল তিনি ঐ জায়গা থেকে একজনের দানকৃত ৩৭ শতক জমি কোটি টাকায় হস্তান্তর করে আত্মসাত করেছেন। তিনি তার ভগ্নিপতি কলেজের পিয়ন সাইফুল ইসলামকে সম্পূর্ন নিয়মের বাইরে সহকারী ল্যাবরেটরি পদে নিয়োগ দিয়েছেন।

নিয়োগে যা চাওয়া হয়েছিল তার কোন কিছুই ছিলনা তার। এসএসসির সনদ, বয়স জালিয়াতি করে নিয়োগসহ এমপিও বেতননের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ। তিনি কলেজের লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে না করে নিজের হাতেই লেনদেন করেন।

কলেজের সাবেক শিক্ষক এনামূল হক বলেন, আমাকে কলেজ থেকে অবৈধ ভাবে অধ্যক্ষ বহিস্কার করে। সে আমার চাকরী এমপিও করে দিবে বলে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমি দিতে রাজি না হওয়ায় সে আমার জায়গায় অন্য একজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। আমাকে বহিস্কার করে।

আরও পড়ুন : দেশে করোনা শনাক্ত ৪৮

অধ্যক্ষের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম বিদেশে থাকতো। সে আমাদের কলেজের পিয়ন ছিল। অধ্যক্ষ ল্যাব সহকারী পদে ভুয়া সনদ দিয়ে বেগডেইটে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়। সে কলেজ থেকে নানা অনিয়মের মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তদন্ত করলেই সব বেড়িয়ে আসবে।

ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক মনোয়ার হোসেন বলেন, আমি সিনিয়র প্রভাষক হওয়া সত্বেও উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি মেনটেইন না করে জুনিয়র আরেক প্রভাষককে টাকার বিনিময়ে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেছেন।

অধ্যক্ষ টাকার বিনিময়ে সকল নিয়োগ দিতেন। সে কিভাবে অধ্যক্ষ হলো, কে তাকে নিয়োগ দিলো কেউ জানে না। সে ভারপ্রাপ্ত থেকে হঠাৎ পুনাঙ্গ অধ্যক্ষের পরিচয় দেয়া শুরু করেছে। আগে অধ্যক্ষ তিন বেলা ভাত খেতে পারতো না। হঠাৎ সে কলেজের সাথে, ময়মনসিংহ শহরে, ভালুকায় কোটি টাকার জমি ক্রয় করে। সে এখন কোটি টাকার মালিক।

আরও পড়ুন : ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ৩০

ভালুকা-ত্রিশাল মৈত্রী কলেজের অধ্যক্ষ খাইরুল বাশার বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাকালিন সময় আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করি। আমি প্রতিষ্ঠা করেছি তাই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে অধ্যক্ষ হয়েছি। নতুন কলেজের ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ নিয়োগে অভিজ্ঞতার কোন প্রয়োজন নাই।

ল্যাব সহকারী নিয়োগে সাইফুল ইসলামের সনদে একটু সমস্যা হয়েছিল। সে রিজাইন নিয়েছে। তার এমপিও বেতন আসে। আমরা তা উত্তোলন করতে পারিনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি অবগত রয়েছেন। আর জমি আত্মসাতের যে বিষয় তা সম্পূর্ন মিথ্যা। ৩৭ শতক জমি কলেজকে একজন দান করে। সে জমির মালিক তার মা আসল মালিক নয় তাই জমি তাদের হস্তান্তর করে দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন : কতবার কষ্ট পেয়েছি

কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ল্যাব সহকারী সাইফুল ইসলামে বেতন আসলেও নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যার কারনে বেতন উত্তোলন করতে পারেনা।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে হাতিয়াতে উঠান বৈঠক

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষ...

ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ

ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ইসলাম...

বাগেরহাটের কলার বাম্পার ফলন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কলার বাম্পার ফলন হয়েছে। জমিতে বসেই কলার দাম ভালো পাওয়ায়...

ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে শাপলা চত্বরের ঘটনা

ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে শাপলা চত্বরের গণহত্যার ঘটনা এমন মন্তব্য কর...

একীভূত হচ্ছে না গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি

সম্প্রতি গুঞ্জন উঠে দেশের তরুণদের নিয়ে গঠিত দল দুইটি একীভূত হওয়ার বিষয়ে। তবে...

আ. লীগের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচরেরা এখনো তৎপর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজ...

লুটপাটের ভিডিও করায় সাংবাদিককে হেনস্তা 

লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধ...

গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক, নিরাপত্তার দাবি জামায়াতের

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় ইসরায়েলের ন্যাক্কারজনক ভূমিকার তীব্র...

আপিলেও জয়ী সেই আরিফ, এখন পৌর মেয়রের শপথের অপেক্ষায় 

কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা মো. আরিফুর রহ...

নিহত যুবদল নেতার পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বগুড়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত যুবদল নেতা রাহুল সরকারের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা