নদীর ভাঙ্গনে নিঃস্ব ঝুমকির পরিবার
সারাদেশ

নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব ঝুমকির পরিবার

শফিক স্বপন,মাদারীপুর : ঝুমকি বেগম। স্বামী, বৃদ্ধ শ্বশুরসহ পরিবারে রয়েছেন ছয়জন। একসময় ছিল তাদের কয়েক বিঘা ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও গরুর খামার। বুকে ছিল অনেক স্বপ্ন। নদী ভাঙনে সেই সকল স্বপ্ন হারিয়ে হয়েছেন এখন নিঃস্ব।

আরও পড়ুন : এবার জেলাতেও প্রথম ঈশ্বরগঞ্জ ভূমি অফিস

সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া শেষ সম্বল জমিটুকুও প্রভাবশালীরা দখল করে নেয়ায় সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে দ্বারে-দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ আকনের স্ত্রী ঝুমকি বেগম ও তার পরিবার।

নদীর পাড়ে বসে অপলক দৃষ্টিতে কী যেন দেখছিলেন ঝুমকি বেগম। একটু এগিয়ে গিয়ে কথা হলো তার সঙ্গে। কী দেখছেন? জানতে চাইলে বলেন, ‘ওই যে নদী দেখতেছেন না? ওই নদীর পাড়ে আমাগো বাড়িঘর,ফার্মসহসব আছিলো, এখন আর কিছুই নাই।

আমার এই জীবনে তিনবার আমাগো বাড়িঘর নদীর পেটে গেছে। জায়গা-জমি যা ছিলো, সব শ্যাষ। কতো যে না খাইয়া থাকছি হিসাব নাই। নদীতে যাগো সব লইয়া যায়, তাগো তো আর কোনো কিছুই থাকে না। এদিকে সব হারিয়ে ওই অসহায় পরিবারের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় নেই বলে জানিয়েছেন ঝুমকির পরিবার।

আরও পড়ুন : আর্জেন্টিনা ফ্যান ক্লাবের কমিটি গঠন

’ভূক্তভোগী পরিবার ও সরেজমিন সুত্রে রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে জানা গেছে, উপজেলার পূর্বএনায়েতনগর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মো. হামিদ আকনের স্ত্রী ঝুমকি বেগম তার স্বামী, শ্বশুর পরিবার-পরিজন নিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে তার নিজ বসতবাড়িতে বসবাস করে আসছেন। ওই বাড়িতেই তিনি একটি ডেইরি ফার্ম নির্মাণ করে সুখের সংসার গড়ে তুলেছিলেন।

কিন্তু কয়েকদফা ভাঙ্গনের পর প্রায় দুই বছর আগে রাক্ষসী নদী আড়িয়াল খাঁ তার বসতভিটা ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে তার স্বপ্ন মূহুর্তের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। এ ঘটনার পরে তাকে ভূমিহীন হিসেবে ঘোষনা করেন ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে তার পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করায় হামিদ আকনের ও তার স্ত্রী ঝুমকী খানমের নামে ১১০নং আলীপুর মৌজায় মোট ২৬ শতাংশ সরকারি খাস জমি কবুলিয়াত দলিল মুলে ভূমিহীন হিসেবে প্রদান করা হয়। পরে সে জমিতে তিনি বসতঘর নির্মান করে ভোগ দখল করেন।

আরও পড়ুন : কীটনাশক খেয়ে ২ শিশুর করুণ মৃত্যু

কিন্তু একই গ্রামের প্রভাবশালী কবির খা, হাবি মালত, নজু মালত ও আরিফ মালতসহ বেশ কয়েকজন মিলে তাকে মারধোর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। উপায়ন্ত না পেয়ে সে তাদের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

পরে আদালত হামিদ আকনকে তার জমি বুঝেয়ে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু তার জমি এখনও বুঝিয়ে না দেয়ায় হামিদ আকন তার পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এবং তার জমি বুঝে পাবার জন্য দ্বারে-দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

ভূক্তভোগী ঝুমকি বেগম ও তার স্বামী হামিদ আকন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা আমাদের পরিবারের ৬জন সদস্য নিয়ে সুখেই ছিলাম। কিন্তু নদী আমার স্বপ্ন নিয়ে গেছে। পরে আমাকে সরকার কিছু জমি দিয়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী কবির খা, হাবি মালত, নজু মালত ও আরিফ মালতসহ বেশ কয়েকজন মিলে আমাকে মারধোর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমি তাদের নামে মামলা করেছি। কিন্তু বিচার পাইতেছিনা। এখন আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। তবে অর্ভিযুক্তরা ঘটনা অস্বিকার করেন।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিংকি সাহা বলেন, হামিদ আকনের বিষয়টি আমি দেখতেছি।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তবে আ.লীগ অংশ নিতে পারবে না

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়ে...

দেশের ৫০ ভাগ নারী, নারীদের নেতৃত্ব ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের ৫০ ভাগ নারী।...

খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে দিনাজপু...

খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে দিনাজপু...

সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, তবে আ.লীগ অংশ নিতে পারবে না

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়ে...

দেশের ৫০ ভাগ নারী, নারীদের নেতৃত্ব ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশের ৫০ ভাগ নারী।...

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে আলী রীয়াজকে নিয়োগ

উপদেষ্টা পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের...

কলেজছাত্রী রোদেলা হত্যা মামলায় স্বামী সোহানের মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরের কলেজছাত্রী সাজিয়া আফরিন রোদেলা হত্যা মামলায় স্বামী সোহানুর রহমান সো...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা