রহমত উল্লাহ,টেকনাফ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় পর্যায়ে সারাদেশে গৃহহীনদেরকে দেয়া ৩২ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান ভিডিও কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে টেকনাফে ভূমি ও গৃহহীন ৪০টি পরিবারের হাতে আধাপাকা নতুন ঘরের চাবি তুলে দেন সরকার প্রধানের পক্ষে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত পরিষদ মিলনায়তনে উপকারভোগীদের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহারের সেমিপাকা ঘর (একক গৃহ) বুঝে পেয়ে রুমা মজুমদার তাঁর অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, কিভাবে যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায় সেই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এ উপহারের ঘর, ঈদের আনন্দের চেয়ে অনেক গুণ বেশি।
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরটি আমার পরিবারকে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। এখন জীবনের প্রথম বার, অন্তত নিজের ঘরে ঈদ উদযাপন করবো এবার।
রুমা মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নতুন জীবন দিয়েছেন। তার জন্য প্রার্থনা করি, অনেক দিন বেঁচে থাকুন তিনি। এভাবেই অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবা করে যেন যেতে পারেন।
ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কায়সার খসরু সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ ইকবাল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শফিক মিয়া, ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন, নুর আহমদ আনোয়ারী ও আমজাদ হোসেন খোকন প্রমুখ এবং স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এনফানুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ উপকারভোগী স্বামী হারা ৮০ বছরের মোস্তফা খাতুন জানান, 'এখন প্রাণ যায় যায় অবস্থা। টিক মতো দাড়িয়ে হাটা সম্ভব না। সারাটি দিন জীবন দুঃখ-কষ্টে গেছে, মানুষের জমিত ঘর করে থাকছি; রোদে পুরে বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজছি। কোনো দিন বাড়ি-ঘরের স্বপন ছিল না। এখন জমিসহ সেমিপাকা ঘর পাছি। এখন নিজের জমি আছে, ঘর আছে।
তিনি জানান, গত ১০ বছর আগে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রাকালে নিখোঁজ হন স্বামী। সে বেঁচে আছে কিনা জানা নেই কারো। ছিল না কোনো সহায়-সম্পত্তি ও মাথা গোঁজার ঠাঁই। দোয়া করি শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। এখন অনন্ত শেষ জীবন নিজের ঘরে কাটবে।'
ইউএনও কায়সার খসরু জানান, 'এবার ৪০টি পরিবারের নতুন ঘরে ঠাঁই মিলেছেন। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক এমন মহতী উদ্যোগ সারা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। যারা এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট তারাও ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। সকল ভূমিহীন মানুষ পর্যাক্রমে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাবেন।'
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ মুজিববর্ষে 'দেশের একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না'- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের যাত্রা। এজন্য সারাদেশের ন্যায় টেকনাফে তৃতীয় পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৪০ পরিবার স্বপ্নের নতুন ঠিকানায় ঠাঁই পেয়েছেন। এর আগে দুই দাফে এ উপজেলায় আরো ২৬২টি পরিবারকে জমিসহ ঘর উপহার দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সান নিউজ/এইচএন