ঝালকাঠি প্রতিনিধ: এনজিওতে চাকরি ও বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণ মামলায় নলছিটি আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলকাঠি ইউপি চেয়ারম্যানে আখতারুজ্জামান বাচ্চু (৪৫)কে জেলহাজতে পাঠিয়েছে ঢাকা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে খালেদা জিয়া
বুধবার ( ৬ এপ্রিল ) উচ্চ আদালতের দেয়া সময়ের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ আত্মসমার্পন করে জামিনাবেদন করলে আদালতের বিচারক রাশেদ কবির নামঞ্জুর করে চেয়ারম্যানে বাচ্চুকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে আ’লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চুর অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে মূহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। ঝালকাঠি ও নলছিটির সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনসহ সর্বমহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানী খিলগাঁও থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষক চেয়ারম্যান বাচ্চু ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের শিকার তরুণী (১৯) নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছে।
কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই নিবাসী দরিদ্র কৃষকের সন্তান নির্যাতিত তরুণী লামিয়া আক্তার বর্তমানে পরিবারসহ ঢাকার ফতুল্লাহ বসবাস করে লোখাপড়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করছিল। প্রায় ৭/৮মাস পূর্বে নলছিটি উপজেলা আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর তার ইমুতে ফোন করে। বিভিন্ন কথার এক পর্যায়ে তার নিজের একটি বড় এনজিও রয়েছে জানিয়ে এবং সে চাইলে একই ইউনিয়নের মেয়ে হিসাবে তাকে একটা ভালো চাকুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাগজপত্র গুছিয়ে রাখতে বলে।
আরও পড়ুন: বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
চেয়ারম্যান বাচ্চুর কথা অনুযায়ী সরল বিশ্বাসে সে কাগজপত্র নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ইং তারিখ বিকালে তাকে ঢাকার গুলিস্থানে দেখা করলে হেড অফিসে নেয়ার কথা বলে একটি প্রাইভেট কারে উঠিয়ে দঃবনশ্রী ৯/২ নাম্বার রোডের ব্লক-ই, বাসা নং-১২৩ (পারোয়ারী বাড়ি) নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থানরত মোর্সেদা বেগম নামে এক নারীর সহায়তায় চেয়ারম্যান বাচ্চু তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ও ভিডিও চিত্র ধারন করে কোন বারাবারি করলে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিলে ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে।
পরবর্তীতে গত ৬ জানুয়ারী নারীলোভী চেয়ারম্যান বাচ্চু ফোন করে পুনরায় সেই বাসায় আসতে বলে অন্যথায় আজকেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবো বলে ভয় দেখালে নিরুপায় হয়ে সেই বাসায় গেলে সেখানে আটকে সারারাত উপোর্যুপুরী ধর্ষণ করে ৭ জানুয়ারী সকালে সেখান থেকে একই হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণের কয়েক দিন পর নির্যাতিতা তরুণী অন্ত;স্বত্তা হয়ে পড়লে বিষয়টি চেয়ারম্যান বাচ্চু কে জানানোর পর তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গর্ভপাত করান।
এরপর থেকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে সে নানারকম ছলচাতুরী শুরু করে পুনরায় তাকে সেই বাসায় দেখা করার জন্যবাধ্য করে। বাধ্য হয়ে অসহায় তরুণী পরিবারের কাছে পুরো ঘটনা জানিয়ে গত ১০ফেব্রুয়ারি রাজধানী খিলগাঁও থানায় আ’লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ও সহযোগী মোর্শেদা বেগমের (৩৫) বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-২২/১১২) দায়ের করেন।
সাননিউজ/এমআরএস