নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার রাত এগারোটায় লাশ নিয়ে হাসপাতাল ঘেরাওসহ বিক্ষোভ এবং ভাংচুর করেছেন এলাকাবাসী ও স্বজনরা।
স্বজনরা জানান, শহরের ডনচেম্বার এলাকার বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ি জিসান আহমেদ এর গর্ভবতী স্ত্রী পান্না বেগম (২৮) কে সোমবার দুপুরে খানপুর এলাকার সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকেল তিনটার দিকে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক মিশকাত জাহান হেনার তত্ত্বাবধানে অপারেশনের (সিজার) মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি।
পরে পান্না বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসক তার শরীরে একটি ইঞ্জেকশন দেন। এতে তার অবস্থা আরো খারাপ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সেখানে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
এখবর জানার পর স্বজনরা ও এলাকাবাসি লাশ নিয়ে এসে হাসপাতাল ঘেরাওসহ বিক্ষোভ ও কাঁচের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পান্নার মা শান্তা বেগম জানান, সকালে সিজারের জন্য এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিকেল ৪টায় সিজার হয় এবং মা মেয়ে দুজনই সুস্থ্য ছিল। কিছুক্ষণ পর নবজাতক মেয়েকে আদর করার সময় কাশি হয়। কাশি দেওয়ার পর নার্স ডাকা হলে তিনি এসে ইনজেকশন পুশ করেন।
ইনজেকশন পুশ করার পর বমি ও রক্ত বের হয়। পরেই পান্না মারা যায়। মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকরা তড়িঘড়ি করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়।
পরিবারের অভিযোগ, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দেয়ার পরই এই প্রসূতির মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। তাদের কর্তব্যে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে স্বজনরা এর সুষ্ঠু বিচার চান।
তবে হাসপাতালের পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির দাবি করেছেন, প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। পরে তাকে ঢাকা পাঠানো হলে তিনি পথে মারা যান।
ঘটনাস্থলে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম জানান, রোগী মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবার সঙ্গে কথা বলেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনএসি/এনকে