ঢাকা জেলা ও মহানগরীতে গতকাল ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় শহরজুড়ে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। একদিনে অন্তত ১১টি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে এবং ৩টি বাসে আগুন লাগানো হয়। বড় ধরনের প্রাণহানি না ঘটলেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ ও সূত্রের বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম বিস্ফোরণটি ভোররাতে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘটে; ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্পর্ক রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমান জানান, দুইজন মোটরসাইকেলে এসে ভবনের সামনে ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। একই ধরনের ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে মোহাম্মদপুরের একটি প্রতিষ্ঠানেও। ধানমন্ডি এলাকা, মাইডাস সেন্টার ও ইবনে সিনা হাসপাতালের কাছে মোট চারটি ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল দুপুর ও সন্ধ্যায় মৌচাক, আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বেতার কার্যলয়, খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকা ও মিরপুর শাহ আলী মার্কেট সংলগ্ন জায়গায় বিস্ফোরণ হয়; রাত ১০টার দিকে ফ্লাইওভার থেকে আরেকটি ককটেল নিক্ষেপের খবর পাওয়া যায়। রাত ১১:১০ মিনিটে বাংলামোটরের এনসিপি কার্যালয় সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে; এতে একজন পথচারী সামান্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে একটি অবিস্ফোরিত বোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন জানান। স্থানীয়রা মোটরসাইকেল চালিয়ে পালানোর সময় দুইজনকে ধরে পরে আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগের দিন কাকরাইলের সেন্ট মেরির ক্যাথেড্রালে এবং মোহাম্মদপুর সেন্ট জোসেফ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকদের বাসভবনের সামনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি ভোরে শাহজাদপুর ও মেরুলবাড্ডায় দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ হয়েছে এবং সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে একটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যাব যৌথ কার্যক্রম শুরু করেছে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষুন্ন করার যে কোনও চেষ্টা কঠোরতার সঙ্গে দমন করা হবে। ঢাকার গির্জা, মন্দির, মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশের নির্দেশে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর সব থানাকে টহল, নজরদারি ও গৌণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়াতে বলা হয়েছে—এ দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ‘দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিটি চেষ্টা দ্রুত ও কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে; জননিরাপত্তা, জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সুরক্ষা আমাদের অগ্রাধিকার।’
সাননিউজ/আরপি