জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া অভিযোগ করেছেন, সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঢাকার কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিক অনুমতি ছাড়া তার বাড়িতে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের ভিডিও ধারণ করেন। এমনকি ঘরে নারী সদস্য উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাদের অনুমতি ছাড়াই ঘরে ঢুকে প্রশ্ন করতে থাকেন এবং দূর থেকে ক্যামেরা রেখে “উল্টাপাল্টা” প্রশ্ন করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রিপন মিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে লেখেন, “আমি কোনো সময় আমার পরিবারকে ফেসবুকে দেখিয়ে টাকা আয় করতে চাইনি। অথচ আজ কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আমার পরিবারকে তাদের সম্মতি ছাড়াই ভিডিও করেছেন।”
তিনি আরও লিখেছেন, “আমি কখনোই কাউকে ছোট করতে চাই না, তাই সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের নাম প্রকাশ করছি না। তবে যারা এই ঘৃণ্য কাজ করেছেন, তাদের উচিত নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করা।”
রিপনের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনা শুধু একটি একক অনভিপ্রেত ঘটনা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে মিডিয়া পরিবেশে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তার পেজ হ্যাকের চেষ্টা, প্রাণনাশের হুমকি এবং নানা প্রকার মানসিক চাপে পড়ার অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুক্তাদিরের প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার পরপরই ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদির রিপনের পোস্টটি শেয়ার করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি লেখেন, “রিপন ভাইয়ের যে জ্ঞান ও মূল্যবোধ আছে, তা যদি আমাদের সবার থাকত, তবে আজ আমরা একটি শিক্ষিত জাতি হিসেবে পরিচিত হতাম।”
তিনি সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, “এই রিপোর্টিংয়ের নামে হয়রানির সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। শুধু রিপনের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত এই ধরনের শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।” সালমান আরও বলেন, “রিপন মিয়া একজন রত্ন। তার মতো মানুষদের যদি আমরা যত্ন না নিই, তবে আমরা তাকে হারিয়ে ফেলব। আমাদের আরও দয়া, আন্তরিকতা, যত্ন ও ভালোবাসার চর্চা প্রয়োজন। কারণ দেশ ইতোমধ্যেই এসবের অনেক কিছু হারিয়েছে।”
রিপন মিয়া একজন কাঠমিস্ত্রি হলেও ২০১৬ সালের “বন্ধু তুমি একা হলে...” শিরোনামের একটি আবেগঘন ভিডিওর মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠেন। সময়ের সঙ্গে তার সহজ, সরল ও হৃদয়ছোঁয়া ভিডিওগুলো তাকে সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত করে তোলে। বর্তমানে ফেসবুকে তার অনুসারীর সংখ্যা ১৮ লাখের বেশি।
রিপনের বক্তব্য এবং এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে গোপনীয়তা, সম্মান এবং সাংবাদিকতার ন্যূনতম শিষ্টাচার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
সাননিউজ/এও