বাগেরহাট সদর উপজেলায় নির্মানাধীন বাগেরহাট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবনের কাজ বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের আশির্বাদপুষ্ট ঠিকাদার মেসার্স সৌরভ ট্রেডার্স। গোপালগঞ্জে বাড়ি এবং শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হওয়ায় বিগত সরকারের আমলেও, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করে কাজ নিয়েছেন। তেমনি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ৬ তলা বিশিষ্ট এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবনের কাজ নেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জান গেছে, মেসার্স সৌরভ ট্রেডার্স-এর প্রোপাইটরের নাম আবু মোহাম্মদ মোরসালিন। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ শহরের চাঁদমারি এলাকার সবুজবাগ সড়কে। তিনি গ্যালাক্সি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে এই্ কাজটি পাচ্ছেন। কাজ পাওয়ার জন্য তিনি নানা অসদুপায় অবলম্বনও করেছেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে দাপ্তরিক গোপনীয় নথী থেকে প্রাক্কলন (ইস্টিমেট) ব্যয় জেনেছেন্ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে। পরবর্তীতে ১০ শতাংশ হ্রাসমূল্যে দরপত্রে অংশগ্রহন করেছেন। একইভাবে তার আস্থাভাজন সৈকত এন্টারপ্রাইজও ১০ শতাংশ হ্রাসমূল্যে দরপত্রে অংশগ্রহন করেন। তারা দুজনই ১৫ কোটি ২৪ লক্ষ ৭ হাজার্ ২৯ টাকা মূল্য দিয়ে দরপত্র দাখিল করেন। এই দরপত্রে আরো তিনটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, কোন কাজের প্রাক্কলন ব্যয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ জানেন না। ওই ঠিকাদারকে অফিসের কোন কর্মকর্তা প্রাক্কলন ব্যয়ের পরিমান জানিয়েছেন। যার ফলে তিনি খুব সহজে ১০ শতাংশ হ্রাসমূল্যে এই দরপত্র দাখিল করতে পেরেছেন। বিগত সরকারের আমলেও আওয়ামী লীগের নেতারা এভাবে বিভিন্ন দপ্তর থেকে কাজ বাগিয়ে নিতেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ ধরণের কাজ হলে সাধারণ ঠিকাদাররা কোথায় যাবে বলে আক্ষেপ করেন ওই ঠিকাদার।
এ বিষয়ে জানতে মেসার্স সৌরভ ট্রেডার্সের প্রোপাইটরকে ফোন করলে, তার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোঃ রইজ ফোন রিসিভ করেন। তিনি বলেন, স্যার (আবু মোহাম্মদ মোরসালিন) হজ্বে গেছেন। তিনিই আসলে আপনি ফোন করেন।
বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাফিজ আক্তার বলেন, আমার অফিস ছাড়াও প্রাক্কলন ব্যয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়, প্রধান কার্যালয় ও প্রকল্প কর্মকর্তার কার্যালয়ে রয়েছে। আসলে ঠিকাদাররা কোথা থেকে পেয়েছে, তা আমার জানা নেই। আমি ঠিকাদারদের কোন তথ্য সরবরাহ করিনি। আর যাদের দাপ্তরিক কাগজপত্র সঠিক রয়েছে, যাচাই-বাচাই করে সেই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হবে। এই কাজের ঠিকাদার মূলত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে নির্বাচন করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
গেল ১৫ এপ্রিল বাগেরহাট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জন্য ৬ তলা একাডেমিক ভবন নির্মানের জন্য দরপত্র আহ্বান করেন বাগেরহাট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাফিজ আক্তার। দরপত্র দাখিলের সবশেষ সময় ছিল ১৫ মে।
সাননিউজ/ইউকে