নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘ সময় ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ানো থেকে সুফল পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এসবের বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। ফলে সাপ্তাহিক ছুটিরদিনসহ যে কোনও দিন ও সময় লেনদেন করতে পারছেন গ্রাহকরা। এতে দিনে দিনে জনপ্রিয়তার সঙ্গে লেনদেনও বাড়ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্যে জানা যায়, বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে ১৫টি ব্যাংক। অক্টোবর শেষে নিবন্ধিত এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ২৮ হাজার ৬৭৭টি, যা গত সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
সেই মাসে নিবন্ধিত এজেন্টের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ১৭ হাজার ৫৫টি। তবে মুল হিসাবধারী ব্যক্তির সংখ্যা সেপ্টেম্বরের তুলনায় কমেছে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অক্টোবর পর্যন্ত হিসাবধারী ছিলেন ৩৩২ কোটি ৯৩ লাখ, সেপ্টেম্বরে ছিলেন ৪১০ কোটি ৩৫ লাখ।
অক্টোবর মাসে লেনদেন হয়েছে ২৯০ কোটি ১৮ হাজার ৪২৩ বার, যেখানে টাকার পরিমাণ ছিল ৫৩ হাজার ২৫৪ কোটি ৮৪ লাখ। আগের সেপ্টেম্বর মাসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯ হাজার ১২১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে অক্টোবরে লেনদেন বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ।
এছাড়া অক্টোবর মাসে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৫৮ বার। যেখানে ছিল এক হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। তার আগে সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৩৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে প্রায় ৫ শতাংশ বেশি লেনদেন হয়েছে।
অক্টোবর মাসে মোবাইলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা। যা আগের মাসের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১১০ কোটি ১০ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে বেড়েছে ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট।
এ সময় ক্যাশ ইন হয়েছিল ১৫ হাজার ৮৭৬ কোটি ৫১ লাখ এবং ক্যাশ আউট হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে ক্যাশ ইন হয়েছিল ১৪ হাজার ৭২৩ কোটি ৩৪ লাখ এবং ক্যাশ আউট হয়েছিল ১৩ হাজার ৮৯৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
অক্টোবরে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে লেনদেন বেড়েছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে ১৬ হাজার ৫৬৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যা সেপ্টেম্বর মাসে হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে বেতন কমেছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ইউটিলিটি কমেছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, দেশে ক্রমেই মোবাইল ভিত্তিক লেনদেন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সক্রিয় হিসাবধারীর সংখ্যা কমেছে, যারা ৩ মাস লেনদেন করেনি এমন গ্রাহককে হিসাবে দেখানো হয়নি। পরে লেনদেন নিয়মিত হলে এটার শতাংশ আবার বাড়বে। সাধারণত ঈদের আগে, বছরের শুরু বা শেষে লেনদেন বেশি হয়।
লেনদেনে অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়ার বিষয়ে শামসুদ্দিন হায়দার বলেন, লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে না। ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা আছে, সার্ভিস চার্জ ২ শতাংশ নেয়ার কথা। আমরা ১ দশমিক ৮ শতাংশ রাখি। যার ৭৭ শতাংশ যায় এজেন্টদের কাছে এবং ৮ শতাংশ ভ্যাট ও মোবাইল কোম্পানির চার্জ।
বাকি ১৫ শতাংশ বিকাশ বা অন্য মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি রাখে। আমরা এজেন্টদের একটু বেশি কমিশন দেই। কারণ, তারা নিজেদের ব্যবসার পাশাপাশি এই সেবা দিয়ে আসছে শহর থেকে গ্রামে। এটা না দিলে হয়তো তারা এ সেবা দিতে আগ্রহী হবে না।
সান নিউজ/এসএ