সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি একজন আসামিকে সাধারণ ক্ষমা করতে পারেন। অতীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় কয়েকজন আসামিকে দেয়া মুক্তি আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে সাত ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই মামলার অন্যতম ফাঁসির আসামি ছিলেন তৎকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান। এ কারণে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়েছিলেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে শফিউল আলম প্রধানের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মাফ করে দেন। পরে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি বা জাগপা গঠন করেছিলেন শফিউল আলম প্রধান। ২০১৭ সালে তিনি মারা যান।
এছাড়া রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ক্ষমা পেয়েছিলেন আবুল কাসেম মানিক। পুরান ঢাকার দুই ব্যবসায়ী আবদুল খালেক রানা ও ফিরোজ আল মামুন হত্যা মামলায় তার বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হয়েছিল। একই মামলায় ২৮ জনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। ১৯৮২ সালে দুজনের ফাঁসি কার্যকর হয়। আবুল কাসেম মানিক ১৯৮৭ সালে আত্মসমর্পণ করেন। পরে এরশাদ তাকে ক্ষমা করে দেন।
অন্যদিকে পুরান ঢাকার দুই ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ফাঁসি হওয়া আসামিদের একজন ছিলেন মহিউদ্দিন জিন্টু। বিদেশে পালিয়ে থেকে ২০০৫ সালে দেশে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তারপর রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তাকে ক্ষমা করে দেন। জানা যায়, পালিয়ে গিয়ে তিনি সুইডেনে ছিলেন। সেখান বিএনপির সুইডেন শাখার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন জিন্টু।
এছাড়া একসঙ্গে ২০ জনকে ক্ষমার ঘটনা রয়েছে দেশে। নাটোরে ২০০৪ সালে তৎকালীন সরকারের ভূমি উপমন্ত্রী রুহুল কদ্দুস তালুকদার দুলুর ভাতিজা যুবদল নেতা সাব্বির আহম্মদ গামাকে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় ২০০৬ সালে ২১ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় হয়। ২০১০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ২০ জনকে ক্ষমা করে দেন। একজন আসামি পলাতক ছিলেন।
অপরদিকে, এএইচএম বিপ্লবও রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পান। ২০১৪ সালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সংসদকে জানান, গত পাঁচ বছরে ২৬ জন ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামির সাজা মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এদের একজন লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লব। ২০০০ সালে লক্ষ্মীপুর বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় ২০০৩ সালে তার বিরুদ্ধে এই রায় হয়। ২০১১ সালে রাষ্ট্রপতি তাকে ক্ষমা করেন। পরে আরেক হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি মুক্ত হন।
এছাড়া ফরিদপুরের আসলাম ফকির ২০০৩ সালে এ কে এম সাহেদ আলীকে হত্যা করেন। সেজন্য তার মৃত্যুদণ্ড হয়। ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগের দিন তিনি এমন আচরণ শুরু করেন, কারাগারের নথির ভাষায় যা ছিল ‘অস্বাভাবিক’ বা ‘অসুস্থতা’। ফলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করা হয়। ২০১৫ সালে তার প্রাণভিক্ষার আবেদন গ্রহণ করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৭ সালে তিনি মুক্তি পান। গতবছর আবারও এক হত্যা মামলার প্রধান আসামি হন তিনি।
অন্যদিকে, তোফায়েল আহমেদ জোসেফ ১৯৯৬ সালে ফ্রিডম পার্টির নেতা মোস্তফা হত্যা মামলায় ২০০৪ সালে জোসেফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ঢাকার জজ আদালত। ২০১৫ সালে আপিল বিভাগ তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। এরপর ২০১৮ সালের মে মাসে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ক্ষমা পেয়ে তিনি মুক্তি পান। সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি আবেদন করেছিলেন ভয়ানক অসুস্থ, তার এক কিংবা দেড় বছর বাকি ছিল সাজা ভোগের৷ সেটার জন্য তিনি মারসি পিটশন করেছিলেন।
সান নিউজ/এমকেএইচ
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            