নিজস্ব প্রতিবেদক: লাবিবা-লামিসাকে আলাদা করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রথম ধাপের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা সময় লেগেছে।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে অস্ত্রোপচার শেষে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের প্রধান সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আশরাফ-উল হক (কাজল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা আজই আলাদা করতে চেয়েছিলাম, অস্ত্রোপচারের সময় দেখা গেছে, শিশু দু'জনের যোনী ও মলদ্বার খুবই কাছাকাছি হওয়ায়, সেপারেশন করা খুবই রিস্ক হয়ে যায়। তাই সেপারেশন না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারন এখন যদি সেপারেশন করা হয়, সেক্ষেত্রে একজনকে রক্ষা করা যাবে আরেক জনকে রক্ষা করা যাবে না।
চিকিৎসক দলের প্রধান জানান, যোনীদ্বার ও মলদ্বার পর্যাপ্ত টিস্যু বৃদ্ধির জন্য, টিস্যু এক্সপ্লেন্ডার বল চামড়ার নিচে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে তাতে স্যালাইন পুশ করা হবে, এতে করে বলটির আকার আস্তে আস্তে বড় হবে, এতে টিস্যু বৃদ্ধি পাবে, যখন দেখা যাবে পৃথক করার জন্য টিস্যু পর্যাপ্ত মনে হবে, তখন ২য় ধাপে অস্ত্রোপচার করা হবে। এতে ৬/৭ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
ব্রিফিংয়ে এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আইয়ুব আলী, এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত কুমার মণ্ডল, হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক, ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আশরাফুল আলমসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের অনেকেই।
এর আগে সকাল ৮ টা থেকে লাবিবা-লামিসাকে পৃথক করতে ঢামেকের বিশেষজ্ঞ দল অস্ত্রোপচার শুরু করেন।
সেসময় অস্ত্রোপচার কক্ষের বাহিরে দীর্ঘ সাড়ে চার ঘন্টা অপেক্ষায় থাকেন তাদের বাবা মা ও স্বজনরা।
সেখানে গিয়ে দেখা গেছে শিশু দু'টির মা ও ফুফু বসে আছেন অপেক্ষায়। কখন কি খবর আসে। এসময় করিডোরে পায়চারি করতে দেখা যায় তাদের বাবা ও নানাকে। চোখে মুখে আনন্দ বেদনার অশ্রু।
শিশুটির বাবা বলেন, তাদের জন্য দোয়া করবেন। তাদের যেন আলাদা করার পর সুস্থ অবস্থায় নিয়ে যেতে পারি। আমরা দোয়া করি হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য।
প্রসঙ্গত, নীলফামারীর জেলার জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপাড়া গ্রামের দিনমজুর লালমিয়া ও মনুফা আক্তার দম্পতির ঘরে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করেন জোরা লাগা ওই দুই কন্যাসন্তান।
সান নিউজ/এম/এফএইচপি