সাননিউজ ডেস্ক: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গ্রেনেড বিস্ফোরিত হওয়ার শব্দ শুনেই আমাকে হানিফ ভাইসহ (সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) কয়েকজন ঘিরে ফেলেন। আমি দেখলাম আমার গায়ে রক্ত আর রক্ত। স্পিন্টারগুলো সব এসে আঘাত করছে হানিফ ভাইয়ের মাথায় ও গায়ে। যেহেতু সে ধরে রেখেছে তার রক্তে আমার শরীর ভেসে যাচ্ছে।
সরকার প্রধান বলেন, তিনটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ হওয়ার পর কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে আবার। মনে হচ্ছে যেন এর শেষ নেই, কেয়ামতের মতো। চারিদিকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। জানি না, আল্লাহ কিভাবে হাতে তুলে আমাকে বাঁচালেন। আমার গায়ে একটাও স্পিন্টার লাগেনি। কিন্তু আওয়াজে ডান দিকের কানে আর শুনতে পাচ্ছিলাম না।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন আমি গাড়িতে উঠতে যাব, দরজাটা খুলে মাহবুব দাঁড়ানো (২১ আগস্ট শহিদ, তার দেহরক্ষী) তখনই গুলি আসলো এবং সেই গুলিতে মাহবুব মারা গেল। আরও কয়েকটি গুলি এসে বুলেট প্রুফ গাড়িতেও লাগলো।
শনিবার (২১ আগস্ট) ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকীর আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।
ওই দিনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণত পুলিশ এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, যারা আহত বা তাদেরকে রক্ষা করতে। এইখানে দেখা গেল উল্টো। বরং আমাদের নেতাকর্মী দূরে যারা ছিল তারা যখন ছুটে আসছে তাদেরকে আসতে দেয়া হচ্ছে না বরং টিয়ারগ্যাস মারা হচ্ছে, লাঠিচার্জ করছে পুলিশ।
তিনি বলেন, তার মানেটা কি? যারা আক্রমণকারী এদেরকে রক্ষা করা, এদেরকে রেসকিউ করার জন্যই এই টিয়ারগ্যাস মারা, লাঠিচার্জ করা।
তিনি আরও বলেন, সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপিমনা ডাক্তাদের কেউ সেদিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিল না। আর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে কোন আহতকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বলেছে এখানে ইমর্জেন্সিতে চিকিৎসা নিতে পারবে না। সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ। আমাদের ডাক্তার রোকেয়া আইভি রহমানসহ প্রায় ৭০ জনকে নিজে একা অ্যানেস্থেসিয়া দিয়েছে।
সাননিউজ/এমআর