নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ভবনের আগুনে কেউ হারিয়েছেন বাবা। কারো গেছে মা। আর কারো গেছে ছেলে-মেয়ে। নিখোঁজদের সন্ধ্যানে স্বজনদের আহাজারিতে নারায়ণগঞ্জের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। বেঁচে নেই নিশ্চিত হয়েও শুধু প্রিয়জনের দেহাবশেষে ছুঁয়ে দেখতে বুক চাপরাচ্ছেন কেউ কেউ।
মা ছেলের সন্ধ্যান করছেন। না পেয়ে ছবি হাতে নিয়ে ঘুরছেন এখান থেকে সেখানে। কোথাও মিলেনি তার আদরের দুলালের খোঁজ। এখন পর্যন্ত ৫৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ভবনটি থেকে। নিখোঁজ রয়েছেন অর্ধশত।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই কারখানা ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন ভবনের অন্যান্য তলায় ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে শ্রমিকরা ভবনের ছাদে জড়ো হন। ছাদসহ বিভিন্ন তলা থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। এতে ওই রাতেই তিনজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, আহতও হন বেশ কিছু শ্রমিক।
মো. আবদুল জলিল ও মো. আবু সামাদ নামের দুজন শ্রমিক জানিয়েছেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবনটিতে ১০০০-১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন।
এক মাকে দেখা যায় হাত উঁচু করে আহাজারি করছে নিজের সন্তানে জন্য। আরেক বধূ খোঁজছে তার স্বামীকে।
দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে আনা হয়েছে। আমাদের প্রথম কাজটি হবে মরদেহগুলোর যথাযথ প্রক্রিয়ায় ডিএনএ টেস্ট করে শনাক্ত করা। সবগুলো মরদেহ আগুনে পুড়ে ঝলছে গেছে। প্রয়োজনে তাদের মরদেহ ফ্রিজিং করা হবে। আত্মীদের সঙ্গে ডিএনএ সিম্পল মিলিয়ে পরবর্তীতে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৫৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ভবনের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় উদ্ধারকাজ শুরু হবে। তালাবদ্ধ থাকায় চতুর্থ তলার কোনো শ্রমিক বের হতে পারেননি। তারা দগ্ধ হয়ে ভবনের ফ্লোরেই মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।
সান নিউজ/এফএআর