নিজস্ব প্রতিবেদক : মুজিববর্ষে দ্বিতীয় দফায় ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিচ্ছে সরকার। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রোববার (২০ জুন) এ কার্যক্রম শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই সময়ে সারাদেশের ৪৫৯টি উপজেলা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমঙ্গল, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবনসহ আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেসব এলাকার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলবেন; জানতে চাইবেন তাদের অনুভূতিও।
এর আগে মুজিববর্ষে গত জানুয়ারিতে প্রথম পর্যায়ে ৬৯ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে ঘর উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও এক লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
‘আশ্রয়ণ প্রকল্পে’র আওতায় যারা ঘর পাচ্ছেন, তাদের কষ্টের দিন পেরিয়ে আজ নতুনভাবে জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর দিন। নিজের একটা স্থায়ী বাড়ি পেয়ে অসীম আনন্দে আত্মহারা এসব মানুষ। এই প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও দোয়া দিয়েছেন তারা।
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো হবিগঞ্জেরও ৩৫৫টি পরিবার উঠছেন তাদের স্বপ্নের ঘরে। তারাও নতুন ঘর নিয়ে নতুন স্বপ্ন বুনছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু বাসস্থানই নয়, পুনর্বাসিত পরিবারের জন্য সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ, রাস্তা, খেলার মাঠ, গাছপালাসহ সকল কিছুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঘর-জমি দেয়ার পাশাপাশি উপকারভোগীদের কর্মসংস্থানের জন্য ঋণ-প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মানবিক উদ্যোগে হবিগঞ্জের অনেকগুলো গৃহহীন মানুষের মুখে হাসি ফুটতে যাচ্ছে। তারা নিজের বাড়িতে উঠে নতুন স্বপ্ন দেখতে যাচ্ছে। এ নিয়ে তাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এভাবে পিছিয়ে পরা মানুষকে সামনে আনার কাজে সাক্ষী হতে পেরে ভালো লাগছে।
 
মৌলভীবাজার জেলাতেও মুজিববর্ষে ঘর পেতে যাওয়া মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। মৌলভীবাজারে ১ হাজার ১৫১ পরিবার পাকা ঘর পাচ্ছে। ৬৫৭ টি ঘর প্রস্তুত হয়েছে। এরমধ্যে ১৬০ টি শ্রীমঙ্গলে।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, যারা ঘর পাবেন তাদের ভাবনার জগতে এক ধরনের পরিবর্তন এসে গেছে। যাদের কিছুই ছিল না তারা আজ ঘর ও জায়গা পেয়ে প্রায় ৪/৫ লক্ষ টাকার মালিক। সুন্দর ঘর ও সুন্দর পরিবেশ পেয়ে সবমিলিয়ে তাদের মনোজগত ও বাহ্যিক জগতে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস জানান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর সর্বপ্রথম জাতির পিতাই দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় পরিবার পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে ১৯৯৭ সনে শুরু হওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে মে ২০২১ পর্যন্ত সময়ে মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে (ব্যারাক, বিশেষ ডিজাইনের ঘর, নিজ জমিতে ঘর, দুই শতক জমিসহ দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা একক গৃহ ইত্যাদি)।
 
মুজিববর্ষে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গৃহ নির্মানের জন্য ঋণ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ভুমিহীণদের ডেকে এনে তাকে জমির মালিক এবং জমি দেয়ার এই নজির একটি মডেল প্রকল্প এবং আমাদের জন্য গর্ব করার বিষয়।
দেশে ক-শ্রেণিতে গৃহহীণ ও ভূমিহীনের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১ এবং খ-শ্রেণিতে ৫ লক্ষ ৯২ হাজার ২৬১ জন জানিয়ে মূখ্য সচিব বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই আরও ১ লক্ষ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিনামূল্যে জমি ও গৃহ প্রদানের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই প্রথম ও সর্ব বৃহৎ উল্লেখ করে ড. কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম বিশাল এবং মানবিক এ উদ্যোগ সারা বিশ্বের কাছে দারিদ্র বিমোচনে সক্ষমতা প্রমাণের একটি নজির বিহীন ঘটনা।
সান নিউজ/এসএম
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            