নিজস্ব প্রতিবেদক: লেখক অভিজিৎ রায়কে লেখালেখি ও মত প্রকাশ বন্ধ করতে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলে, অভিজিৎ রায় একজন বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার ছিলেন। বাংলা একাডেমির বইমেলায় বিজ্ঞানমনস্ক লেখকদের আড্ডায় অংশগ্রহণ করে ফেরার পথে আক্রমণের শিকার হন। নাস্তিকতার অভিযোগ এনে নিষিদ্ধ সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরা (অর্থাৎ মামলার অভিযুক্তরাসহ মূল হামলাকারী) অভিজিৎ রায়কে নৃশংসভাবে হত্যা করে। স্বাধীনভাবে লেখালেখি ও মত প্রকাশের জন্য অভিজিৎ রায়কে নিজের জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হয়। অভিজিৎ রায়কে হত্যার উদ্দেশ্য হলো জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বন্ধ এবং নিরুৎসাহিত করা যাতে ভবিষ্যতে কেউ স্বাধীনভাবে লেখালেখি ও মত প্রকাশ না করতে পারে।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান অভিজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এই পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে।
আদালত বলে, বাংলাদেশের জন নিরাপত্তা বিপন্ন করার জন্য আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণকে মতামত প্রকাশ ও স্বাধীন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে অভিযুক্ত আসামিদের অভিন্ন অভিপ্রায় ছিল বিজ্ঞান মনস্ক ব্লগার অভিজিত রায়কে হত্যা করা। এক্ষেত্রে অভিযুক্ত আসামিদের কারো ভূমিকা ছোট বড় করে দেখার সুযোগ নেই। যেহেতু অভিযুক্ত ৫ আসামি মেজর (বরখাস্তকৃত) জিয়া, আকরাম হোসেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ও আরাফাত রহমান আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে সাংগঠনিকভাবে অভিজিৎ রায় হত্যায় গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। এ জন্য ৫ আসামির একই সাজা দেওয়া হবে বাঞ্ছনীয়।
বিচারক বলেন, অভিজিৎ রায় হত্যায় অংশ নেওয়া অভিযুক্ত আসামিরা বেঁচে থাকলে আনসার আল ইসলামের বিচারের বাইরে থাকা সদস্যরা একই অপরাধ করতে উৎসাহী হবে এবং বিজ্ঞান মনস্ক ও মুক্তমনা লেখকরা স্বাধীনভাবে লিখতে এবং মতামত প্রকাশ করতে সাহস পাবে না। কাজেই আসামিরা কোনো সহানুভূতি পেতে পারে না। সেজন্য মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ও আরাফাত রহমানকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। এতে একদিকে নিহতের আত্মীয়রা শান্তি পাবে এবং মুক্তমনা লেখকরা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশে সাহস পাবে। অন্যদিকে ভবিষ্যতে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করতে ভয় পাবে এবং নিরুৎসাহিত হবে।
প্রসঙ্গত, অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অন্য একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুজিবুর রহমান এ আদেশ দেয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, মো. আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহা, মো. আরাফাত রহমান, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (বরখাস্ত) এবং আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আবদুল্লাহ।
সান নিউজ/এসএস
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            