দীর্ঘ নয় মাস বন্ধ থাকার পর আজ শনিবার থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। তবে দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণকারীদের জন্য জারি করা হয়েছে কঠোর ১২টি নির্দেশনা, এবং আজ থেকেই জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাহাজ মালিকরা।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ মৌসুমে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। তবে নভেম্বরে দ্বীপে রাতযাপনের সুযোগ নেই; শুধু দিনের বেলা দর্শনার্থীরা যেতে পারবেন।
এদিকে আজ থেকে চলার কথা থাকলেও, ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ ও ‘বারো আউলিয়া’সহ কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে ছেড়ে যাচ্ছে না। সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, “কক্সবাজার থেকে দ্বীপে যেতে সাত থেকে দশ ঘণ্টা সময় লাগে। রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় একই দিনে যাওয়া-আসা প্রায় অসম্ভব।” তিনি জানান, ডিসেম্বর থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এই দ্বীপে বর্তমানে এক হাজার ৭৬ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। গত নয় মাস পর্যটন বন্ধ থাকায় দ্বীপের পরিবেশে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে—ফিরে এসেছে সামুদ্রিক পাখি, প্রবাল ও কচ্ছপের আবাসস্থল।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, “সেন্টমার্টিনে ভ্রমণকারীদের জন্য অনলাইন টিকিট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে—যা যাচাই ব্যতীত কেউ দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবে না।”
১২ নির্দেশনার মূল দিকগুলো:
১️) অনুমোদনহীন কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে যেতে পারবে না।
২️) ট্যুরিজম বোর্ডের ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইন টিকিট সংগ্রহ বাধ্যতামূলক।
৩️) প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২,০০০ পর্যটক দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন।
৪️) নভেম্বরে রাতযাপন নিষিদ্ধ; ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত অনুমতি থাকবে।
৫️) ফেব্রুয়ারি থেকে পুনরায় পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকবে।
৬️) সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো বা শব্দ সৃষ্টি নিষিদ্ধ।
৭️) সৈকতে মোটরচালিত যানবাহন (সি-বাইক, মোটরসাইকেল) চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৮️) পলিথিন বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৯️) একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক, বোতল, চিপস প্যাকেট ইত্যাদি নিরুৎসাহিত।
১০) বারবিকিউ বা খোলা আগুন ব্যবহার নিষিদ্ধ।
১১) বর্জ্য সংগ্রহ ও অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মানতে হবে।
১২) জীববৈচিত্র্য ধ্বংস বা প্রবালক্ষয় ঘটায় এমন কার্যক্রমে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাননিউজ/এও