জাতীয়

মাহরীন চৌধুরীকে অশ্রুমাখা স্যালুট

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাহরীন চৌধুরী, যিনি শিশুদের বাঁচাতে জীবন দিলেন

২১ জুলাই, ২০২৫। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের পরপর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলের একটি ভবনে যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে, সেই কঠিন সময়ে একজন শিক্ষক রয়ে গিয়েছিলেন শিক্ষার্থীদের পাশে। তিনি মাহরীন চৌধুরী। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমন্বয়ক, যিনি দায়িত্বের জায়গা থেকে সরেননি।

মাহরীন চৌধুরীর শরীরের বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছিল। রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন তিনি। মাহরীনের ছোট ভাই মুনাফ মজিব চৌধুরী বোনের মৃত্যুর খবর দিয়ে ফেসবুক পোস্টে লেখেন-

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মাহরীন আপু (মাহরীন চৌধুরী) আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি আমার বড় বোন। যিনি আমাকে মায়ের মতো করে বড় করেছেন। তিনি মাইলস্টোন স্কুলের কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। ভবনে আগুন লাগার সময় তিনি সবার আগে নিজে বের হননি, বরং যতজন ছাত্রছাত্রীকে পারা যায়, বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। এতে তাঁর শরীরের ১০০ শতাংশ অংশ পুড়ে যায়। আজ রাতে আমার প্রিয় বোনের জন্য দোয়া করবেন দয়া করে। তিনি রেখে গেছেন তাঁর দুই ছেলে-আমার দুটি ভাগনে। আমরা এখনো হাসপাতালে থেকে তাঁর মরদেহ বুঝে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’

মাহরীন চৌধুরী ম্যাডামকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক পোস্ট চোখে পড়ছে। তাঁর ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে ‘বীর’ হিসেবে বর্ণনা করে লিখছে।

আমরা উত্তরা মাইলস্টোন কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় হতাহতের জন্য গভীর শোক জানাচ্ছি। আমরা যাদের হারিয়েছি, তাদের বেশির ভাগই শিশু। কত শিশু, কত মানুষ যে হাসপাতালে পোড়া শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে, দম বন্ধ হয়ে আসে তা ভাবতে গেলে।

এই গভীর শোকে আমরা স্তব্ধ। তবু এ সময়ে মাহরীন ম্যাডামের মতো ‘বীর’ শিক্ষকদের কথা পড়ে, জেনে, শুনে আমরা গভীর শ্রদ্ধায় নত হই। আমাদের চোখ ভিজে আসে। আমরা সাহসে বুক বাঁধি।

আমাদের স্কুলের বইয়ে পড়েছিলাম ফেলেসিয়া ডরোথিয়া হেমানসের লেখা ‘ক্যাসাবিয়াঙ্কা’ কবিতা—

The boy stood on the burning deck

Whence all but he had fled;

The flame that lit the battle's wreck

Shone round him o'er the dead.

এক সাহসী ছেলের কথা ছিল কবিতায়। ছেলেটির বাবা তাকে জাহাজের একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলেন। জাহাজে আগুন লাগে। ছেলেটি পুড়ে যায়, মারা যায়, কিন্তু তার জায়গা থেকে সরে যায়নি।

‘ছেলেটি জ্বলন্ত জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে ছিল

সরে গিয়েছিল সবাই—কেবল সে ছিল বাকি;

সেই আগুনের আলো, ধ্বংসস্তূপের ওপরে পড়ে ছিল

চারদিকে মৃতদেহ।’

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ির মাহরীন ম্যাডাম আরও বড় কাজ করেছেন। তিনি শিশুদের, তাঁর ছাত্রছাত্রীদের বাঁচানোর জন্য জীবন দিয়েছেন। আমরা তাঁকে আবারও শ্রদ্ধা জানাই।

সাননিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত বেড়ে ৩১: আইএসপিআর

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ...

মাইলস্টোনে দুই উপদেষ্টা অবরুদ্ধ, সঙ্গে আছেন প্রেস সচিবও

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি. আর. আবরার মাইলস্টো...

তারা সুতারিয়ার ‘তুমি আমার’

বলিউড অভিনেত্রী তারা সুতারিয়া তাঁর সর্বশেষ মিউজিক ভিডিও ‘থোড়ি সি দারু&r...

‘মনে হয়েছে এটাই থেমে যাওয়ার সময়’

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর সময় কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ খানিকটা ভারী হয়ে আসছিল। পা...

 হতাশ তরুণদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা

হতাশ তরুণদের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা সিলভেস্টার স্ট্যালোন তখন...

তাজউদ্দীনকে পাঠ করা কেন জরুরি

২৩ জুলাই, ২০২৫। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিক...

‘মনে হয়েছে এটাই থেমে যাওয়ার সময়’

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর সময় কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ খানিকটা ভারী হয়ে আসছিল। পা...

পশ্চিমা আধিপত্য মোকাবিলায় একজোট রাশিয়া-চীন-ইরান

সম্প্রতি ইরান, রাশিয়া ও চীনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে তেহ...

সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমন্বয় নেই

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শ...

আহত, নিহত ও নিখোঁজের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে কমিটি

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের বি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা