আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত বছর সেপ্টেম্বরে ইরানে হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অপরাধে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীকে গ্রেফতার করে দেশটির নৈতিকতা পুলিশ। পরে পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: গুপ্তচরবৃত্তি, ২ মার্কিন নাবিক আটক
তার মৃত্যুর ১ বছর পূর্তির সময় ঘনিয়ে আসার সময় এ আইন আরও কঠিন করার চিন্তা-ভাবনা করছে দেশটি সরকার।
বুধবার (৩ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
হিজাব আইন লঙ্ঘনকারীদের আরও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে একটি নতুন খসড়া আইন প্রস্তুত করছে ইরান। ৭০ ধারার খসড়া আইনটি এতটাই কঠিন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেটিতে আঁতকে উঠবেন অনেকে।
আরও পড়ুন: ৩ লাখের বেশি সেনা হারিয়েছে ইউক্রেন
এ আইনটিতে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- যারা হিজাব পরিধানে অস্বীকৃতি জানাবেন, তাদের আরও লম্বা সময়ের জেল দেওয়া হবে। যেসব তারকা ও ব্যবসায়ী এ আইন ভঙ্গ করবেন, তাদের আরও কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
যারা আইন ভঙ্গ করবে, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যবহার করে তাদের শনাক্ত করা হবে এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মিরে হামলা, ৩ সেনা নিহত
ইরানে বর্তমানে যে হিজাব আইন রয়েছে, সেটি কেউ ভঙ্গ করলে তার ১০ দিন থেকে ২ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে অথবা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে, যা বর্তমানে ১.১৮ থেকে ১১.৮২ মার্কিন ডলারের সমান।
নতুন এ আইনে শাস্তির বিধানসমূহ-
নতুন খসড়া আইনে এ শাস্তি অনেক বেশি কঠিন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, কেউ হিজাব পরিধান বিধান লঙ্ঘন করলে ৫-১০ বছরের জেলসহ ৩৬ কোটি ইরানি রিয়াল জরিমানা হতে পারে, যা ৮ হাজার ডলারেও বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খসড়া আইন ইঙ্গিত দিচ্ছে গত বছর হিজাববিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হলেও এই আইন কার্যকরে পিছপা হবে না দেশটির সরকার।
আরও পড়ুন: মুম্বাইয়ে বিচারপতির পদত্যাগ
রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম মেহের বলছে, খসড়া আইনটি এ বছরের শুরুতে বিচার বিভাগ সরকারের কাছে প্রেরণ করেছিল। এটি পাঠানো হয় পার্লামেন্টে। পরবর্তীতে আইন ও বিচার কমিশনে এটি গৃহীত হয়।
গতকাল রোববার (৬ আগস্ট) আইনটি বোর্ড অব গভর্নরের কাছে পাঠানো হবে। এরপর এটি যাবে পার্লামেন্টের ফ্লোরে।
সংবাদ মাধ্যমটি আরও জানায়, পার্লামেন্ট আগামী ২ মাসের মধ্যে আইনটির ওপর ভোটাভুটির আয়োজন করবে।
আরও পড়ুন: ইথিওপিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি
উল্লেখ্য, ইরানে হিজাব সংক্রান্ত ইস্যুর লম্বা ইতিহাস রয়েছে। ১৯৩৬ সালে রেজা শাহর শাসনামলে দেশটিতে হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে দেশটির পরবর্তী শাসক ১৯৪১ সালে এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে শাহদের শাসনের পতনের পর ১৯৮৩ সালে দেশটির হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়। সূত্র: সিএনএন।
প্রসঙ্গত, ইরানে জনসম্মুখে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দা পালনের নিয়ম রয়েছে। এ বিধি তদারক করার জন্য রয়েছে দেশটির নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ।
আরও পড়ুন: জনগণ যেভাবে চাইবে, ভোট সেভাবেই হবে
এই পুলিশের একটি দল গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সাথে তেহরানে ঘুরতে গিয়েছিলেন।
আটকের পর মাহসা আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর থেকে ইরানজুড়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় শুরু হয়। দফায় দফায় বিক্ষোভ শুরু হয় দেশটির ৫০ টির বেশি শহরে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এ বিক্ষোভে দেশটি ১৫০ জনের মানুষ বেশি মারা গেছে।
সান নিউজ/এনজে
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            