সান নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, যুদ্ধে ইউক্রেনের ১০ হাজার থেকে ১৩ হাজার সেনা নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: এডিসিসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
ইউক্রেনের পক্ষে হতাহতের পরিসংখ্যান দেওয়ার ঘটনা বিরল। তবে পোডোলিয়াকের মন্তব্য দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত জুনে তিনি বলেছিলেন, যুদ্ধে দেশটির একশ থেকে দুশো সেনা প্রতিদিনই নিহত হচ্ছে। বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত মাসে মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেল মার্ক মিলি জানান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রাশিয়ার অন্তত ১ লাখ ও ইউক্রেনের ১ লাখ সেনা হতাহত হয়েছে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে।
আরও পড়ুন: চীনে লকডাউন শিথিল
গত বুধবার এক ভিডিও বার্তায় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দার লিয়েন বলেন, যুদ্ধের ইউক্রেনের ১ লাখ সেনা নিহত হয়েছে। তবে পরে তিনি এটি ভুল বলে আবারও জানান, হতাহতের সংখ্যা ১ লাখ।
ইউক্রেনের চ্যানেল ২৪ টেলিভিশনকে পোডোলিয়াক বলেন, কিয়েভ নিহতদের সংখ্যা নিয়ে খোলামেলা কথা বলছে। তিনি বলেন, জেনারেল স্টাফদের তথ্য মূল্যায়ন করে যেটি জানা যাচ্ছে তা হলো ১০ থেকে সাড়ে ১২ হাজার বা ১৩ হাজারের মতো সেনা নিহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যা ‘উল্লেখযোগ্য’ হতে পারে। বিবিসির সংবাদে ৩ হাজার ৬০০ বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার খবর জানানো হয়েছিল গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তবে সেটি এখন আরও বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা মাস ঘোষণার দাবি
পোডোলিয়াক আরও জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ১ লাখ রুশ সেনা নিহত এবং ১ থেকে দেড় লাখ আহত হতে পারে বা নিখোঁজ থাকতে পারে।
বিবিসির রাশিয়া সার্ভিস বলছে, কমপক্ষে ৯ হাজার ৩১১ জন সেনা নিহত হয়েছে রাশিয়ার। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১৮ হাজার ৬০০-র বেশি হতে পারে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অস্থিরতা তৈরি করেছে বিশ্ববাজারে। অধিকাংশ দেশে বেড়েছে সব পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কোথাও কোথাও সেই ক্ষোভ সহিংস রুপ নিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুন: এইডসে মারা গেছেন ২৩২ জন
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যায় যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির চেহারা। নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি।
নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। সম্প্রতি খারকিভে পাল্টা প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলে ইউক্রেনের সেনারা।
সান নিউজ/এনকে