আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বরিস তার দপ্তর এবং ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে বার বার মদের পার্টির আয়োজন করে এখন তার খেসারত দিচ্ছেন। এমনকি তার পদত্যাগের দাবিও জোরালো হচ্ছে।
দ্য টেলিগ্রাফ শুক্রবার (১৪ জানুয়ারী) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২১ সালের ১৬ এপ্রিল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে শোক পালনের সময়ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে কর্মীরা আরও দুটো মদের পার্টি করেন। ওই সময়ও জনসমাগমের নিষেধাজ্ঞা ছিল।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, ডাউনিং স্ট্রিটের কর্মীরা কাছের একটি সুপারমার্কেট থেকে মদ কিনে নিয়ে যান। তারা নেচে-গেয়ে পার্টি উদযাপনও করেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যদিও সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে এ ঘটনায় রানির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বরিস জনসন।
এর আগে ২০২০ সালের ২০ মে মদের পার্টির আয়োজন হয় ডাউনিং স্ট্রিটে, যখন সারাদেশে লকডাউন জারি ছিল। সম্প্রতি পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে ওই ঘটনার জন্য বরিস জনসন বার বার ক্ষমা চেয়েছেন।
তিনি জানান, ঐ পার্টিতে ২৫ মিনিটের জন্য যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তবে তার ধারণা ছিল ‘কাজের অংশ হিসেবে’ তার স্টাফদের ধন্যবাদ দেয়ার জন্য ঐ পার্টির আয়োজন করা হয়।
সেদিনের ঐ পার্টির আয়োজন করে কোভিড সংক্রান্ত কোন আইন ভঙ্গ করা হয়েছিল কিনা, তা যাচাই করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেশ করা হবে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, সরকারের তরফ থেকে বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষকে ঘটনাটির তদন্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টির এক আইনপ্রণেতা বলেছেন, তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার দুইশর মতো মেইল বার্তা পেয়েছেন। তাদের মধ্যে শুধু পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সমর্থনে বার্তা দিয়েছেন। তার দলের অনেক আইনপ্রণেতা এখন ধারণা করছেন আগামী নির্বাচনে হয়ত দলীয় নেতা হতে পারছেন না বরিস। তিনি বলেন, আমাদের অনেকেই তার দায়িত্বভারের সমাপ্তি চাইছেন।
কনজারভেটিভ পার্টির স্কটল্যান্ডের নেতা ডগলাস রোস বলেন, বরিস জনসন একজন প্রধানমন্ত্রী। এটা তার সরকার, যারা কিনা আইন বাস্তবায়নে কাজ করছে। তিনি যে ধরনের কাজ করেছেন, সে জন্য তাকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। রোস আরও বলেন তিনি ‘১৯২২ কমিটির’ কাছে চিঠি লিখবেন, যাতে বরিসের নেতৃত্ব নিয়ে আস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব নির্বাচনে কাজ করে থাকে কনজারভেটিভ প্রাইভেট মেম্বারস কমিটি বা ১৯২২ কমিটি। দলটির ৫৪ জন আইনপ্রণেতা যদি কমিটির কাছে চিঠি লেখেন, তবে বরিসের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বৈকি।
সান নিউজ/এনকে