আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মরণব্যাধি করোনাভাইরাস কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইন্দোনেশিয়ায়। ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ তথ্যমতে,গত দু’দিনে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপদেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৮৯২ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৭৭০ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯ লাখ ৪ হাজার ৫৬৯ বর্গকিলোমিটারের দেশ ইন্দোনেশিয়ার সীমানাভূক্ত ১৩ হাজার ৪৬৬টি দ্বীপের প্রতিটিতেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনা; তবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ জাভা, প্রধান পর্যটন দ্বীপ বালি, পাপুয়া এবং সুমাত্রা। গত দেড় বছরের মহামারি পরিস্থিতিতে এই প্রথম এত স্বল্পসময়ের মধ্যে এত বিপুলসংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ইন্দোনেশিয়ায়।
দেশের যেসব অঞ্চলে সংক্রমণের হার বেশি কিংবা বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে, ইতোমধ্যে সেসব অঞ্চলকে ‘রেড জোন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের ৪৩ টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই এলাকাসমূহে জনগণের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় অর্থনমন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হারতার্তো বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাভায় বর্তমানে সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, দেশের অন্যান্য এলাকায় যেন এই অবস্থা দেখা না দেয় সেজন্যই উপদ্রুত এলাকাসমূহকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে।’
এই অঞ্চলসমূহের অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠাগুলোর মোট লোকবলের ২৫ শতাংশকে দফতরে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, দোকান-পাট, বাজার ও রেস্তোঁরাসমূহ খোলা রাখা যাবে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।
এদিকে, করোনা সংক্রমণের এই সাম্প্রতিক উল্লফনে ভয়াবহ চাপের মধ্যে পড়েছে দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। জাভা, বালি, পাপুয়াসহ বিভিন্ন দ্বিপের অধিকাংশ হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি করার জায়গা না থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা অনেক গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে হাসপাতালগুলো।
দেশটির জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, করোনার সাম্প্রতিক এই উল্লফনে সবচেয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে দেশটির বৃহত্তম ও সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপ জাভা।
সাননিউজ/এএসএম