আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরেই তার বেড়ে ওঠা। করেন অক্সিজেনের ব্যবসা, নিজেই প্ল্যান্টের মালিক।
তবে করোনা মহামারিতে সারাদেশ যখন নাকাল তখন অক্সিজেন নিয়ে দাঁড়িয়েছেন মানুষের পাশে। বিনামূল্যে অক্সিজেন ও সিলিন্ডার দিচ্ছেন যে শহরটিতে বেড়ে উঠেছেন সেটির নাগরিকদের। দেশের এ ক্রান্তিকালে তিনি যেন ভুলেই গেছেন ব্যবসা ও মুনাফার কথা।
এ পর্যন্ত ৭৪ জন নাগরিককে বিনামূল্যে সিলিন্ডারসহ অক্সিজেন দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন উখড়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনোজ সরাফ। তার এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনও।
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উখড়ার প্রায় চার প্রজন্মের বাসিন্দা মনোজের বাবা প্রয়াত অযোধ্যা সরাফও ছিলেন ব্যবসায়ী। রাঁচীর একটি কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে মনোজ যোগ দেন পৈতৃক ব্যবসায়।
পরে নিজে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে তৈরি করেন অক্সিজেন প্ল্যান্ট। সেখানে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ কিউবিক মিটার শিল্পক্ষেত্রের উপযোগী অক্সিজেন উৎপাদন হয়। তবে এই মুহূর্তে প্রশাসনের নির্দেশ মতো সব অক্সিজেনই দিতে হচ্ছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে।
সরকারি বা বেসরকারি স্তরে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা যথেষ্ট নয়- এমন অভিযোগ উঠেছে উখড়াসহ জেলার নানা প্রান্ত থেকে। এর পরই মনোজবাবু সিদ্ধান্ত নেন, সিলিন্ডার বিতরণের।
তিনি বলেন, আমার অক্সিজেন প্ল্যান্ট থাকতে আমার প্রিয় শহর উখড়ার মানুষ প্রাণ-বায়ু পাবেন না, এটা হতে পারে না। তাই শহরের পাশে দাঁড়াতে এমন কাজ শুরু করি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে মনোজসহ তিন জনের মোবাইল নম্বর ছড়িয়ে দিয়ে সিলিন্ডার বিতরণের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ওই নম্বরগুলোতে ফোন করে, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ও আধার কার্ড নিয়ে রোগীর স্বজনরা পৌঁছে যাচ্ছেন মনোজের উখড়ার একটি অফিসে।
সেখান থেকে নিয়ে যেতে হচ্ছে অক্সিজেন ও সিলিন্ডার। এভাবে মোট ৬৫ জন কোভিড রোগী এবং ৯জন হৃদরোগ, ক্যানসার বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর কাছে সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মনোজ সরাফ।
মনোজ সরাফ বলেন, অক্সিজেনসহ সিলিন্ডার শুধুমাত্র উখড়ার বাসিন্দাদের জন্য। এর বাইরে অণ্ডাল পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় কেউ সিলিন্ডার নিয়ে এলে তাকেও বিনা খরচে অক্সিজেন ভরে দেব।
সাননিউজ/এএসএম