যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সপ্তাহেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস।
খবরে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির ভেতরে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে স্টারমার এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
টাইমস জানায়, অন্তত সাতজন মন্ত্রিসভার সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিচ্ছেন যেন তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন। যদিও ইশতেহারে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নি, লেবার পার্টি ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই।
টাইমস আরো জানায়, লেবার পার্টির প্রায় ১৩০ জন ব্যাকবেঞ্চ এমপি-অর্থাৎ সংসদীয় দলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ-ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি চেয়ে দাবি তুলেছেন।
একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, স্টারমার ‘এই মুহূর্তে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এমন এক পরিকল্পনা ভাগাভাগি করছেন, যা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তৈরি’ এবং এর অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের ‘নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের অবিচ্ছেদ্য অধিকার’-এর প্রতি সম্মান জানিয়ে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের ২২০ জনের বেশি সংসদ সদস্য (এমপি), যাদের মধ্যে শাসক দল লেবার পার্টির অনেকেই আছেন, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।
নয়টি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষর করা একটি যৌথ চিঠিতে তারা বলেন, ‘আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিন।’
উল্লেখ্য, ২৮ ও ২৯ জুলাই জাতিসংঘের উদ্যোগে এই সম্মেলনটি ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘আমরা বুঝি, যুক্তরাজ্যের একার পক্ষে স্বাধীন ও মুক্ত ফিলিস্তিন গঠন সম্ভব নয়। তবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি একটি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দেবে বিশ্বকে।’
সেইসঙ্গে, ব্রিটেনের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা’র মাধ্যমে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল; এখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়াও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’
এ চিঠিতে কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ওয়ানেশনাল পার্টি এবং ওয়েলসের প্লাইড কামরিসসহ বিভিন্ন দলের সংসদ সদস্যরা স্বাক্ষর করেন। এতে মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তির পক্ষে যুক্তরাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জোরালো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে স্টারমার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপে রয়েছেন, বিশেষ করে তার দলের অভ্যন্তর থেকেই। এই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাননিউজ/এসএ