নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান বলেছেন, স্যালাইন আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সেগুলো অনুমোদনের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। সবমিলিয়ে স্যালাইন নিয়ে আমাদের আর কোনো সংকটের মুখোমুখি হতে হবে না।
আরও পড়ুন: ভিসা নীতি নিয়ে পুলকিত হওয়ার কারণ নেই
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে এ বছর মধ্যবয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষ। এছাড়া ৫ বছরের নিচের বয়সী শিশুদের আক্রান্তের হার ৮ শতাংশের মতো। এ সময় শিশুদের ডেঙ্গু নিয়ে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
ডা. হাবিবুল আহসান বলেন, এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে। জুলাই মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৮৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ২০৪ জনের।
আগস্ট মাসে রোগী ছিল ৭১ ৯৭৬ জন, মৃত্যু ছিল ৩৪২ জনের। সেপ্টেম্বর মাসের আজ পর্যন্ত আক্রান্ত ৬০৯০৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩০০ জনের। গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭১৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু আউটব্রেক হয়েছিল। সে বছর মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। কিন্তু এ বছর শেষ হওয়ার আগেই যে সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন, তা ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: কানাডায় নিহত ছাত্রীর জানাজা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু রোগী সবচেয়ে বেশি। ঢাকার বাইরে সারা দেশে আমাদের ৮ টি বিভাগীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগে।
ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম ও লক্ষ্মীপুর জেলা এবং বরিশাল বিভাগের বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশ কম।
আরও পড়ুন: সেতুর নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার
চিকিৎসা প্রসঙ্গে ডা. হাবিবুল আহসান বলেন, সারা দেশের সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও একই প্রটোকল এবং গাইডলাইন অনুসরণ করে ডেঙ্গুর চিকিৎসা হচ্ছে।
আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ের সব চিকিৎসককে ডেঙ্গু চিকিৎসা ও পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
স্যালাইন সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য সব জায়গাতেই পর্যাপ্ত পরিমাণ এনএস-১ কিট মজুদ রয়েছে। ডেঙ্গু পেশেন্ট ম্যানেজমেন্টে সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন, সেটি হল আইভি ফ্লুইড স্যালাইন। এ স্যালাইন নিয়ে সাময়িক একটা সমস্যা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভিসা নিষেধাজ্ঞায় সরকার উদ্বিগ্ন নয়
সেই প্রেক্ষিতে জরুরিভাবে আমরা ভারত থেকে ৩ লাখ প্যাক স্যালাইন আমদানি করেছি এবং এর মধ্যে ৪৪ হাজার প্যাক স্যালাইন আমরা হাতে পেয়েছি।
অধিদফতরের এই পরিচালক আরও বলেন, আমরা ইডিসিএলের (এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড) মাধ্যমে এসব স্যালাইন চাহিদা অনুযায়ী পাঠিয়ে দিয়েছি। বাকি স্যালাইনগুলো পর্যায়ক্রমে দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সেগুলো সারা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
সুতরাং বলা যায়, এ মুহূর্তে আমাদের কোনো স্যালাইনের সমস্যা হচ্ছে না। এই ৩ লাখ ছাড়াও আরো স্যালাইন আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সবমিলিয়ে স্যালাইন নিয়ে আর কোনো সংকটের মুখোমুখি হতে হবে না।
সান নিউজ/এনজে