ফিচার

পাটের দামে খুশি কৃষক

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও: সোনালী আঁশ খ্যাত পাটে সুদিন ফিরেছে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকদের। বাজারে ভালো দাম আর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই এলাকায় দিন দিন বেড়েছে পাটের চাষাবাদ। মৌসুমের শুরুতেই পাট বিক্রি করে ভাল দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলনও হয়েছে ভাল।

এদিকে, পাট ধোয়া ও শুকানোর কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে জেলাটিতে। সোনালি আঁশের সোনালী রংয়ে ভরে গেছে কৃষকের ঘর। বাজারে দাম ভাল থাকায় পাট ধোয়া ও রোদে শুকানোর ধুম পড়েছে জেলার সর্বত্রই। এ বছর বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক জায়গায় কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। যদি বৃষ্টিপাত বেশি হতো তাহলে পাটের মান আরেকটু ভাল হতো এবং কৃষকরা ভাল দাম পেত ।

জেলার হাট-বাজার গুলোতে প্রতি মণ পাট ২৭শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তাই ভালো ফলন ও আশানুরুপ দাম পেয়ে বিগত বছর গুলোতে লোকসানে পড়া কৃষকদের মুখে সন্তুষ্টির হাসি ফুটে উঠেছে। শুরুতে অবশ্য এ দাম ছিল ২২শ থেকে ২৩শ টাকা মন দরে।

এতে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা মোটা অংকের টাকা লাভবান হচ্ছেন।তারপরও পাটখড়ি পাওয়ায় কৃষানীরা বেশ খুশি হয়েছেন।অবশ্য এখন বিক্রি না করে কয়েক মাস পাট ঘরে মজুদ রাখতে পারলে কৃষকরা দ্বিগুন টাকা লাভবান হবেন বলে জানান বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।

ফসলের খেত নদী বা খাঁলের পাড়, রাস্তার ধারে এমনকি কৃষকের বাড়ির উঠান সবখানেই পাট কাটা, ধোয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং শুকানোর ব্যস্ততা। ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিটি গ্রামেই এখন চিরচেনা এই দৃশ্য চোখে পড়বে। পাট শুকানোর জন্য বেছে নেয়া হয়েছে বাঁশের আঁড় ও বিভিন্ন ব্রিজের রেলিংও। সোনালী আঁশ কৃষককে দিয়েছে সুদিনের ডাক। তাইতো পাট বাজার উপযোগী করে তুলতেই এ জেলার কৃষক-কৃষাণীর এখন যেন দম ফেলার ফুরসত নেই।

আখানগর ভেলারহাট এলাকার কৃষক মনসুর আলী, শাহীন বাদশা ও আব্দুল আজিজ নামে একাধিক কৃষক জানান, একবিঘা জমিতে হালচাষ, সার বীজ সেচ নিড়ানি পাট কর্তন, ধোয়া ও শুকাতে ব্যয় হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা। আর একবিঘা জমিতে পাট পাওয়া যাচ্ছে ১০-১২ মন। যার বাজার মূল্য ৩ হাজার টাকা মণ দরে ৩৬ হাজার টাকা।

এতে খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভবান হচ্ছেন তারা। অবশ্য যারা অন্যের জমি ফসল ফলানোর চুক্তিতে কিনে নিয়ে আবাদ করেন তাদের লাভ ৫ হাজার কম হচ্ছে বলে জানান চাষীরা।

রহিমা বেগম নামে একজন কৃষানী জানান, একমাত্র পাটই কৃষক পরিবারগুলোকে বাচিয়ে রেখেছে। তাছাড়া পাটখড়ি জ্বালানী হিসেবে বেশ ভাল। একবিঘা জমিতে পাট চাষ করলে ওই পরিবারকে আর জ্বালানীর চিন্তা করতে হয় না।

চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬ হাজার ২৯২ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে দেশি জাতের পাট আবাদ হয়েছে ৭১৭ হেক্টর ও তোষা জাতের পাট আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১০০ হেক্টর। আর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৯ হাজার ৪২৫ বেল ।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু তাহের বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অতিরিক্ত জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক জায়গায় কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে। যদি বৃষ্টিপাত বেশি হতো তাহলে পাটের মান আরেকটু ভাল হতো এবং কৃষকরা ভাল দাম পেত।

পাটচাষকে লাভজনক করতে হলে সবক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এ সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে, উৎপাদন বেশি হবে তাহলে কৃষকরা লাভজনক অবস্থায় পৌঁছাবে।

তাছাড়াও পাট কর্তন পরবর্তী পানিতে ডোবানোর ক্ষেত্রে রিবন নেটিং পদ্ধতি ঠাকুরগাঁওয়ে এখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। এটি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় করা গেলে পাটের সুদিন ফিরবে এবং পাটের আঁশের মান ভাল হবে। ফলে কৃষকেরা ভাল দামও পাবেন।

সান নিউজ/এমএএন/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আড়িয়ল ইউপিতে উপ-নির্বাচন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়িতে গৃহকর্মীকে জিম্মির অভিযোগ 

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি দিবস

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী প্রতিনিধি:

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশের মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইন...

বঙ্গোপসাগরে কার্গো জাহাজ ডুবি

জেলা প্রতিনিধি : নোয়াখালী জেলার হ...

যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি যেকোনো উ...

মাটি খোঁড়ার সময় উদ্ধার মাইন-মর্টারশেল

জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারীতে পুকুর খননের সময় উদ্ধার দুইটি মাই...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা