আদিল সরকার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্রীকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে খুশি করার মতো খোলামেলা ছবি চেয়ে গানের স্বরে কথা বলছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। শুধু তাই নয় অডিওতে মেয়েকে যখন যা বলা হবে তা-ই করার নির্দেশ দিতে শুনা যায় টুটুলকে।
গত বুধবার ৬ মিনিট ২১ সেকেন্ডের এমনই এক চাঞ্চল্যকর কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়েছে টুটুলের ৷ তবে সেখানে ওই মেয়ের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনায় তার বিচারের দাবিতে শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর রুমে ভাংচুর করে ওই ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে বিচারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দেয় তারা। এদিকে অডিওর সূত্রে টুটুলের অফিস না ভেঙ্গে প্রধান প্রকৌশলীর অফিস ভাঙ্গচুরের ঘটনায় বিভিন্ন মহলে জন্ম দিয়েছে নানান প্রশ্ন।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টায় ইসতিয়াক, শাকিল, বিন্ত, শাহীন পাশা, উম্মে হাবীবা হ্যাপীসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী টুটুলকে রুমে যায়। এসময় তাকে রুমে না পেয়ে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে দেখা করেন তারা। এসময় কথা বলার একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রধান প্রকৌশলীর রুমের শোকেচের আয়না ভাঙ্গচুর করেন। সেই সাথে দরজায় লাথি মারেন। পরে ভবনের উপরের তলা ও নিচের মূল গেট তালা লাগিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রধান প্রকৌশলীসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবরুদ্ধ হয়ে পরেন। পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে তার বিচার চেয়ে বহিষ্কারের দাবিতে স্মারকলিপি দেন। শেষে প্রায় ১ ঘন্টা পর প্রকৌশল ভবনের তালা খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।
স্মারকলিপিতে তারা জানান, প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুলের আপত্তিকর অডিও ক্লিপ বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের বিব্রত করছে । একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বিনষ্ট করেছে। এছাড়াও এর আগে ২০১৩ সালে কুষ্টিয়ায় এক শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের গোপন ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয় টুটুল। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয় তাকে। বর্তমানে তার স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আলিমুজ্জামান টুটুল মায়ের চিকিৎসার কথা জানিয়ে শনিবার থেকে ৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এবিষয়ে তার সাথে কথা বলতে চাইলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ভাঙচুরের বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ উদ্দীন মোঃ তারেক বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার অফিসের দরজায় লাথি দেয়াসহ ভিতরের কাচঁ ভাংচুর করেছে। ভাংচুরের ঘটনায় প্রকৌশল অফিস থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। লিখিতে নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে টুটুলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান প্রকৌশলীর রুমে ভাংচুরে জন্ম দিয়েছে নানান প্রশ্ন। এর আগেও রাতের আধারে ছাত্র হলে বিস্ফোরণের ঘটনায় পরদিন উপাচার্যের কাছে প্রধান প্রকৌশলী ও উপাচার্যের পিএসের পদত্যাগের দাবি জানায় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, টুটুল যে কাজটি করেছে তা গ্রহনযোগ্য নয়। তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনকে