শিক্ষা

সেপ্টেম্বরে খুলতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের কারণে ১৭ মাসেরও বেশি সময় বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আপাতত এ পরিকল্পনা থেকে বাদ রাখা হয়েছে; যদিও নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তাও সরকারের রয়েছে।

স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এ পরিকল্পনার বাইরে রাখার পেছনে যুক্তি হলো- চলতি শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ। সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অর্ধ বার্ষিক, বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় এই বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ঘোষণায় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

এর মধ্যে অবশ্য দুইবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার চিন্তা করেও শেষ পর্যন্ত সরে আসতে হয়েছে সরকারকে। ফলে এবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার বিষয়ে আগাম ও আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না। তবে যতদূর সম্ভব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের করোনার টিকার আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মূলত এই টিকাপ্রদানের ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব পরিকল্পনা নির্ভর করছে আগামী এক মাসে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা যায় তার ওপর।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো আগে নেয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে দুদিন পরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সর্বস্তরের শিক্ষকদের টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে টাইমলাইন দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার কাজও চলছে জোরেশোরে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, সরকারি পর্যায়ের প্রায় শতভাগ শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন। বাকি আছেন প্রায় ৮৪ হাজার জন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ হাজারের বেশি শিক্ষক টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি। আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই সব শিক্ষকই টিকা নিয়ে নেবেন আশা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ছয় হাজার ৭২ জন।

সরকার মূলত চাইছে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে শেষ করা। এরপর আটকে থাকা স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার দিকে এগুতে চায় সরকার। এরপর কলেজ ও তারপর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার চিন্তা রয়েছে সরকারের।

সম্প্রতি শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের একটি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা। করোনার এখন যে সংক্রমণ চলছে সেটা কমে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা স্কুলগুলো খুলে দিতে চাই। সরাসরি ক্লাস শুরু করা খুব দরকার। স্কুল খুলে দেওয়ার পূর্ণ প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তদারকিতে প্রাথমিক শিক্ষকরা বেশিরভাগই টিকা নিয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তবে এ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে কি না সে ব্যাপারটি পরিষ্কার করেননি মন্ত্রী। এ মুহূর্তে করোনার টিকার সংকট না থাকায় এ‌ দুটি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যায় কি-না তার জন্য বিকল্প ভাবনায় রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকায় রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা ফরম পূরণের নথি দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সীমিত পরিসরে কেবলমাত্র তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়া হবে। সরকারের ভাবনা হলো, সেপ্টেম্বরে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া সম্ভব হলে এ দুই পাবলিক পরীক্ষার ৪৪ লাখ পরীক্ষার্থী অন্তত আড়াই থেকে তিন মাস সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পাবে। এতে তাদের শিখন ঘাটতি অনেকটা মেটানো যাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ প্রসঙ্গে জানান, মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি চিঠি দিয়ে প্রতি দুদিন অন্তর বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ক্লাসরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটি করছেন। ভ্যাকসিন কার্যক্রমও চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খোলা হবে তা আগাম বলতে চাই না। পরিস্থিতি যখনই অনুকূলে আসবে তখনই ঘোষণা দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রমও চলছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শেষ করার পর অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হবে। এছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শেষ হলেই অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে। অনাবাসিক শিক্ষার্থী যারা প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে, তাদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাই তাদের স্টুডেন্ট আইডি কার্ড নম্বরের মাধ্যমে টিকা দেওয়া যায় কি-না, সে ব্যাপারেও আলাপ-আলোচনা করছি।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে বিশেষ হেল্প লাইন চালু করা হয়েছে। তারা সেখানে গিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যে এনআইডি নিতে পারবেন বলে আমাদের জানানো হয়েছে।

সান নিউজ/এমএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, প্রধানম...

আবেদনময়ী লুকে নুসরাত

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চলচ্চিত্র চিত্রনায়িকা নুসরাত...

খাগড়াছড়িতে শাশুড়ি হত্যায় জামাতা আটক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে জুয়া খেলতে...

৬ তারিখে বাজেট প্রস্তাবন

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন, ৬...

গণতন্ত্র শেখ হাসিনার হাতেই সুরক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকামী মান...

বাক-বিতণ্ডার জেরে নিহত ১

উপজেলা প্রতিনিধি: সাভার জেলার আশু...

হিমাগারে মজুত ১ লাখ ডিম

জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া সদরে &lsquo...

নিখোঁজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি : চাঁদপুরে নিখোঁজ হওয়ার পর ডাকাতিয়া নদী থেকে...

কিরিগিজস্তানে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাওয়া নিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি,...

ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে চলমান...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা