ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষা

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজের পিএইচডি নিয়ে জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে আজ রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: ভূমিদস্যুদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

রোববার (১২ মে) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নগর হাসপাতা‌লের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন- ‘আলোর নিচে অন্ধকার, দুর্নীতিবাজ রেজিস্ট্রার’, ‘নিপাত যাক নিপাত যাক, দুর্নীতিবাজ রেজিস্ট্রার'।

এ দিন বেলা ১১টায় ঢাকার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নগর হাসপাতা‌লে পূর্ব নির্ধারিত গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখা‌নে বর্তমান রেজিস্ট্রারের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন- গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী (সদস্য), অধ্যাপক আলতাফুন্নেছা (সদস্য), শিরীন পারভিন হক ও অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ অন্যান্য সদস্যসগণ।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক-পুলিশকে মারধর, চেয়ারম্যান গ্রেফতার

শিক্ষার্থীদের দাবি, গণ বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের রেজিস্ট্রার তাসা‌দ্দেক আহ‌মেদ আগে নি‌জে‌কে ডক্ট‌রেট ব‌লে প‌রিচয় দি‌তেন। প‌রে জানা যায় তি‌নি প্রতারণা ক‌রে‌ছি‌লেন। আস‌লে তার পিএইচ‌ডি ডি‌গ্রি ছিল না।

এ প্রতারক রেজিস্ট্রারকে যা‌তে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ করা হয়, তার চাক‌রি আর বৃ‌দ্ধি না করা হয় সে দাবিতে বেশ কিছু‌দিন ধ‌রেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন শিক্ষার্থী‌রা।

ট্রাস্টি বোর্ডের সভা শুরুর আগেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নগর হাসপাতা‌লের প্রবেশমুখে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের প্লাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনে অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আবিদ হোসাইন নাফি বলেন, রেজিস্ট্রার তাসাদ্দেক চাকরিতে যোগদানের সময় নিজেকে ডক্টরেট পরিচয় দেন এবং নানান চিঠিতেও নামের আগে ড. পদবি ব্যাবহার করেন।

আরও পড়ুন: এআইয়ের অপব্যবহার রোধে ব্যবস্থা

কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তা‌র ডক্টরেট ডিগ্রি নেই। বিভিন্ন পত্রিকায় এ খবর ছাপা হয়। এরপর থেকে তা‌কে নিজের নামের আগে ডক্টরের পদবি ছাড়াই স্বাক্ষর দিতে দেখা যায়।

এ ধরনের জালিয়াতি করার পরও তিনি কীভাবে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন, তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন।

শোনা যাচ্ছে, তাকে পূণরায় পূর্ণবহাল করার জন্য কোনো একটি মহল নানান রকমভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এ জালিয়াতির কারণে স্পষ্ট ভাষায় তার অপসারণ চাই। সেই সঙ্গে তার অন্যান্য দুর্নীতির তদন্ত করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোহাম্মদ আলী বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গরিবের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার গণ বিশ্ব‌বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল, দেশের সাধারণ ও গরিবের সন্তানদের কম টাকায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুন: সুবর্ণচরে ৯ কেন্দ্রের ভোট বাতিলের দাবি

কিন্তু বর্তমান রেজিস্ট্রার ও উপাচার্যসহ একটি মহল নানা রকম অনিয়ম আর দুর্নীতিতে লিপ্ত। যারা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তাদেরকে ভয় দেখায়। নানা ষড়যন্ত্রের ভেতর দিয়ে সৎ ও আদর্শবান শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করে রেজিস্ট্রার ও উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জায়গায় পরিণত করেছেন।

তারা দফায় দফায় নানা রকম ফি বৃদ্ধি করছেন। ইদানিং সমাবর্তনের ফি নামে টাকা-পয়সা লুটপাটের একটা আখড়া খুলে বসেছেন। এসবের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ জানাই এবং পিএইচডি সনদপত্র জালিয়াতকারী রেজিস্ট্রারের অপসারণ চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শুকরিয়া বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা শিক্ষাগ্রহণের জন্য আসি। আর গণ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য সেকেন্ড অপশন। এখাসে অল্প টাকায় মোটামুটি একটা ভালো সিলেবাসে পড়া, ভালো মানের একটা ডিগ্রি নিয়ার সুযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন: ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

কিন্তু শিক্ষা শুধু বইয়ের পড়া আর সার্টিফিকেটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না। এখানে কি আমরা প্রতারণা, জালিয়াতি, দুর্নীতি শিখতে এসেছিলাম? তারা কি শেখাচ্ছে আমাদের?

এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থী, দেশ ও সমাজের জন্য কি বিরূপ প্রভাব ফেলছে না? অনেকদিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা বা আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো কর্ণপাতই করছে না।

উল্টো নানাভাবে শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রেখে অনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। আমরা সুষ্ঠু প্রশাসনিক ব্যবস্থা চাই, সুন্দর পরিবেশ চাই। দুর্নীতির কালো হাত আমাদের অগ্রাধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আরও পড়ুন: কাল কুতুবদিয়ায় নোঙর করবে এমভি আবদুল্লাহ

তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চাই। প্রশাসন চাইলেই তা সম্ভব। আমরা চাই না আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ দিনের অর্জন করা সুনাম কিছু অযোগ্য লোকের কারণে নষ্ট হোক। ডা. জাফরুল্লাহর আদর্শ আমরা ধারণ করি এবং ধরে রাখার চেষ্টা করে যাবো।

রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বরাবর সেভাবেই দেখতে চেয়েছি, যেভাবে স্যার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেখেছেন।

আমরা চাই না, স্যারের স্বপ্নে কেউ অন্যায়ভাবে হিংস্র থাবা মেরে ছিড়ে খাক। স্যার যেভাবে শিখিয়েছেন, অন্যায় বিরুদ্ধে কোনো ছাড় নেই আমরা সেভাবেই কাজ করে যাবো।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

চাকরি হারিয়ে জি-নাইন কলা চাষে ভাগ্যবদল  

বাগেরহাটের ফকিরহাটে জি-নাইন (গ্রান্ড নাইন) জাতের কলা চাষ করে আলোচনায় এসেছেন স...

মোরেলগঞ্জে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ৫ লাখ মানুষ

মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীটিতে ব্রিজ না থাকায় সুন্দরবনের উপকূলের মোরেলগঞ্জ ও শরণখ...

ঢাকাই সিনেমার নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন।

ঢাকাই সিনেমার নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল মাদ...

সৌন্দর্যের লীলাভূমি ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন

অপার প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুন্দরবন যারা দেখেননি তারা ছুটিতে বেড়িয়ে যেতে প...

সৌন্দর্যের লীলাভূমি ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন

অপার প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সুন্দরবন যারা দেখেননি তারা ছুটিতে বেড়িয়ে যেতে প...

ঢাকাই সিনেমার নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন।

ঢাকাই সিনেমার নব্বইয়ের দশকের চিত্রনায়িকা বনশ্রী মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকাল মাদ...

চাকরি হারিয়ে জি-নাইন কলা চাষে ভাগ্যবদল  

বাগেরহাটের ফকিরহাটে জি-নাইন (গ্রান্ড নাইন) জাতের কলা চাষ করে আলোচনায় এসেছেন স...

মোরেলগঞ্জে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ৫ লাখ মানুষ

মোরেলগঞ্জে পানগুছি নদীটিতে ব্রিজ না থাকায় সুন্দরবনের উপকূলের মোরেলগঞ্জ ও শরণখ...

নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান !

নেপালে তীব্র বিক্ষোভের পর প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা পদত্যাগের পর দেশটিতে অন্ত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা