নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে দেলোয়ার বাহিনী প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল কালামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া উভয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো তিনমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীনের চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলী মামুনুর রশীদ লাভলু। আদালতে বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন ও আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনী জনৈক স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে প্রহার করা হয়। সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন অভিযুক্তরা। পরে আহত ওই নারী চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে জেলা সদরে তার বোনের বাসায় পালিয়ে যান।
সেখানে গিয়েও অভিযুক্তরা তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন। গৃহবধূ এতে রাজি না হওয়ায় আগের ধারণ করা ভিডিও ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
এ ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করেন নির্যাতিত নারী। মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে অভিযোগপত্র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করা হয়।
পরে গত বছরের ৬ অক্টোবর দায়ের করা মামলায় চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি দুই আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও তার সহযোগী মোহাম্মদ আলী ওরেফে আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মাত্র ১৩ কার্যদিবসে বাদীপক্ষের ১২ জন ও আসামিপক্ষের তিনজনসহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা হয়।
সান নিউজ/এমকেএইচ