নিজস্ব প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরহাজারী ইউনিয়নে ডিজিটাল ভূমি জরিপের এক তসদিক কর্মকর্তার ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় ৩শ ৫০ ঘনফুট কাঠ জব্দ!
ভাইরাল হওয়া ৪১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, চরহাজারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুরুল আলম চাষী এক লাখ টাকার একটি বান্ডেল উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা সামছুল হককে দিচ্ছেন এবং তিনি তা গুনে নিচ্ছেন।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী ফেনী জেলার সোনাগাজী এলাকার নাফিজ নামের এক শিক্ষকের মালিকাধীন জমি নিজের নামে রেকর্ড করতেই নুরুল আলম চাষী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা সামছুল হককে ওই টাকা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাবার মৃত্যু, দেখতে আসার পথে ছেলের মৃত্যু
ভুক্তভোগী শিক্ষক নাফিজ বলেন, ‘আমার পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ারা রেকর্ড, খাজনার রসিদসহ সব কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও টাকার বিনিময়ে নুরুল আলম চাষী অবৈধভাবে রেকর্ড করে নিতে ওই টাকা লেনদেন করেছেন। আমি বিষয়টি নোয়াখালী জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।’
জানতে চাইলে জরিপ কর্মকর্তা সামছুল হককে এক লাখ ৭ হাজার টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুরুল আলম চাষী। তিনি দাবি করেন, ওই টাকা ঘুষের নয়। কুমিল্লার এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার পরিবারের জন্য টাকাগুলো পাঠিয়েছেন। যা সামছুল হকের বাড়ির পাশে হওয়ায় তার মাধ্যমে দেওয়া হয়। তবে কুমিল্লার টাকা নোয়াখালীতে কেন এলো, এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি নুরুল আলম।
অভিযুক্ত উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা সামছুল হক টাকা গুনে নেওয়ার ভিডিওটি তার বলে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনিও দাবি করেন, তার বাড়ির পাশের এক প্রবাসীর পরিবারকে পৌঁছে দিতে ওই টাকা তাকে দেন নুরুল আলম চাষী। তাৎক্ষণিকভাবে কথিত ওই প্রবাসীর নাম জিজ্ঞাসা করলে কিছুক্ষণ চুপ থেকে পরে জানাবেন বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
আরও পড়ুন: গৌরীপুরে টিসিবির কার্ড নিয়ে বাণিজ্য!
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন সোহাগ ভূমি জরিপে ঘুষ লেনদেনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমার কাছেও বহু অভিযোগ এসেছে। তারা আমার ইউনিয়ন পরিষদে বসে আমার এলাকার জনগণের পকেট কাটছেন, যা মেনে নেওয়া যায় না। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেজবা উল আলম ভুইঁয়া বলেন, ভূমি জরিপে নানান কথা শুনে আসছি। যেসব অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তা সমাধানও করে দিয়েছি। এখনো কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আবদুল হাই গাজী বলেন, চরহাজারী ইউনিয়নের এটাস্টেশনের কাজের দায়িত্ব ওই কর্মকর্তাদের। অনেক সময় তারা আমাদের কথাও শোনেন না। ভিডিওর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
সান নিউজ/আর