সারাদেশ
লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন!

গামছা পেঁচিয়ে সাবিনাকে হত্যা করে সুমন

কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম): বিয়ে করার কথা বলে সকালে বন্ধু নাঈমের খালি বাসায় সাবিনাকে ডেকে আনেন প্রেমিক সুমন। দুপুরে দুজন জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করেন। বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় বেলা আড়াইটার দিকে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। দুই বন্ধু মিলে সাবিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। নাঈম দুই হাত চেপে ধরেন। আর প্রেমিক সুমন গলায় গামছা পেঁচিয়ে সাবিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

আরও পড়ুন: উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন চুল্লি পাবে বাংলাদেশ

মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ নতুন কেনা একটি ওয়ারড্রোপে ভরে পিকআপে তুলে নিয়ে ফেলে দেয় গাজীপুরের বিকেবাড়ি সড়কের পাশে। গত সোমবার ও মঙ্গলবার ভোরে অভিযান চালিয়ে জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বর্ণনা দিয়ে পিবিআইকে এসব তথ্য জানায়, সাবিনার মূল ঘাতক সুমন।

নিহত ছামিনা খাতুন ওরফে সাবিনা (৩২) কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার দাড়ার পাড় গ্রামের আয়নাল হকের মেয়ে। দুই বছর আগে স্বামীর সাথে তার ডিভোর্স হয়। তার ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। তিনি পাঁচ-ছয় বছর ধরে গাজীপুরের বিকেবাড়ি এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।

আরও পড়ুন: ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শেরপুরের নকলার মাওড়া গ্রামের মোর্তুজা আলীর ছেলে রাকিবুল হাসান সুমন (২৪), তার বন্ধু কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের ধনকুরা গ্রামের সুনু মিয়ার ছেলে নাঈম (২৭), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ চৌবাড়ীর শাহ আলম আকন্দের ছেলে শাহরিয়ার আকন্দ (১৯) এবং টাঙ্গাইলের গোপালপুরের নবগ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে ফারুক হোসেন (২৪)। তাদের মধ্যে ফারুক পিকআপ চালক এবং অন্যরা গার্মেন্টস শ্রমিক ও পরস্পর বন্ধু।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, সুমন বিবাহিত, একই গার্মেন্টসে চাকরির সুবাদে স্ত্রীর কথা গোপন রেখে দুই বছর আগে আট বছরের বড় সাবিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন। পরে গাজীপুর বোর্ড বাজারের সাইনবোর্ড এলাকায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তিন-চার মাস আগে প্রেমিকাকে ছেড়ে নগরীর বাসন থানার নাওজোড় এলাকায় স্ত্রীর কাছে চলে যান সুমন। প্রায় সময় সুমনকে ফোনে বিয়ের জন্য চাপ দিতেন সাবিনা। রাজি না হওয়ায় নাওজোড় এলাকার লোকজন দিয়ে সুমনকে মারধর করান প্রেমিকা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বন্ধু নাঈমকে নিয়ে সাবিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সুমন।

আরও পড়ুন: নানাবাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার শিশু

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ে করার কথা বলে সাবিনাকে গত ১৩ অক্টোবর নাঈমের ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্কের পর হত্যা করেন। এরপর লাশ ঘরে রেখে বাসার কাছের একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে কিস্তিতে ১২ হাজার টাকায় একটি ওয়্যারড্রোব কিনে আনেন দুই বন্ধু। অপর বন্ধু শাহরিয়ারের সহায়তায় ৩জনে মিলে লাশ ওয়্যাড্রোবেব ভরেন। বেলা ৩টার দিকে পিকআপ ভাড়া করে ওয়্যারড্রোবসহ লাশ বিকেবাড়ি সড়কের পাশে ফেলে রেখে আসেন। ওই দিন মধ্যরাতে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে জয়দেবপুর থানার পুলিশ ওয়্যারড্রোব থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

রাতেই পিবিআই নিহতের আঙুলের ছাপ নিয়ে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের খবর দেয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের ছোট ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে পিকআপ চালককে ঢাকার আজিমপুর কাঁচাবাজার এবং অন্যদের গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। নাঈমকে বুধবার ও অন্যদের মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে সবাই বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সান নিউজ/কেএমএল

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা