এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এবার ব্যাপক পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। জমিতে বোরো ধানের পরিচর্যায় ঘাম জড়ানো সময় পার করছেন কৃষকেরা। ঋতুরাজ বসন্ত শেষে আবহাওয়া পরিবর্তনে বৈশাখে গ্রীস্মের ছোঁয়ায় কঁচি ধানের আধা-পাকা সবুজ শীষে মন জুড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়ন তাদের পছন্দ না
বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শুধু ধান গাছের সমারোহ। বর্তমানে ধান গাছ থেকে বের হয়েছে শীষ। আর এই শীষ দেখে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা।
গেল আমনে ফলন ভালো ও বাজারে দাম ভাল পাওয়ায় বেশ লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। এবার বোরো মৌসুমে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে আগাম কালবৈশাখী ঝড়ে কিছু কিছু এলাকায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।তবে বেশির ভাগ এলাকায় ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। দ্বিতীয় দফায় আর কোন প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: জবিতে ২৫ এপ্রিল থেকে ঈদের ছুটি
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এবার ১৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে ২৪০০ হেক্টর জমিতে। মাঠে মাঠে সবুজের সমাহার। প্রতিটি ধানগাছে শীষ বেড়িয়েছে। কিছু কিছু জমিতে পাকতে শুরু করেছে ধান। দুই এক জায়গায় আগাম ধান কাটাও হয়ে গেছে। রোগ-বালাই কম থাকায় এবং সময় মতো সার, কীটনাশক ও সেচ সুবিধা পাওয়ায় ধানের গাছও হয়েছে ভালো।
বৈশাখের মাঝে হাড়ফাটানো রোদ। সেইসঙ্গে পূবালী বাতাসে দোল খাচ্ছে গাছগুলো। অনেক কৃষক পোকামাকড় দূরীকরণে ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করছেন। ধানের ক্ষেতে যেন দুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে শুরু হবে পুরোদমে ধান কাটা।
উপজেলার মাইজবাগ পাছপাড়া এলাকার কৃষক নিজামুল মিয়া বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। গতবার ধান বিক্রি করে বেশ লাভ হয়েছে। আশা করি এবারও ন্যায্য দাম পাবো। তবে ধান কাটার সময় শ্রমিকের খুব সঙ্কট হয়। তাই ধান কাটার মজুরি কিছুটা বেশি খরচ হয়ে যায় বলে জানানেল কৃষক নিজামুল।
আরও পড়ুন: নওয়াজের সঙ্গে বৈঠক করবেন বিলাওয়াল
উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নে কৃষক মুজিবুর রহমান বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। আর আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যেই আমার জমির ধানগুলো কাটতে হবে। সরকারের কাছে দাবি, এবারও যেন ন্যায্যমূল্য পাই।
উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের ঘাগড়া পাড়া গ্রামের বারেক বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এবার ধান চাষ করেছি। কিন্তু আমার জমিতে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে কিছু বোরোধানের জমি অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই ফলন হয়তো কিছুটা কম হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, আগাম কালবৈশাখী ঝড়ে কয়েকটি এলাকায় বোরোধানের ক্ষতি হলেও সার্বিক দিক বিবেচনায় বোরো মৌসুমে ভালো ফলন হয়েছে। তবে রোগ-বালাই দমনসহ কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ও কৃষকেরা লাভবান হবে।
সান নিউজ/এনকে