এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): বাড়ি থেকে ব্যাডমিন্টন খেলতে বের হয়েছিল নওশাদ। পরবর্তীতে অনেক খোঁজাখুঁজি পরেও যখন পাওয়া যাচ্ছিলো না, তখন স্থানীয় সাংবাদিকের সহযোগিতা কাজে লাগিয়ে হারিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নওশাদকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন মানবিক ডা. শাহরিয়ার তাহমিদ ফয়সাল। নওশাদ নামের শিশুটির বয়স ১৩ বছর। এর গত মাসের ৩ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক রাত ৭টার দিকে খেলার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল নওশাদ।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার আওয়ামী লীগে গৃহবিবাদ
সোমবার (২৮ মার্চ) সকালে মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরটিকে জরাজীর্ণ অবস্থায় স্থানীয়রা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে রেখে যান। তখন ইমার্জেন্সি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন ডা. শাহরিয়ার তাহমিদ ফয়সাল। বিষয়টি তার চোখে পরলে তাৎক্ষণিক স্থানীয় সেচ্ছাসেবক মোঃ ইসহাক মিয়াকে অবহিত করে এবং হারিয়ে যাওয়া অস্পষ্ট ভাষী নওশাদের দুটি ছবি এবং একটি ছোট্ট ভিডিও পাঠায় যেখানে নওশাদ শুধু হায়দ্রাবাদ ৩৯নং ওয়ার্ড মাদ্রাসা ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছিলো না।
এই তিনটি শব্দ নিয়েই ছেলেটির পরিচয় খুঁজতে বেরিয়ে পরেন সাংবাদিক মোঃ ইসহাক। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। পোস্ট করার ৩ ঘন্টা পরেও যখন কোন খোঁজ মিলছিলো না। তখন ইসহাক এই তিনটি শব্দ গুগলে সার্চ দেন এবং একটি মাদ্রাসার ওয়েবসাইট পান। সেই ওয়েবাসাইট থেকে একটি নাম্বার নিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান ছেলেটি তাদের না।
আরও পড়ুন: আলোচিত ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
এরপর মোঃ ইসহাক সেই মাদ্রাসা শিক্ষকের কাছ থেকে স্থানীয় কাউন্সিলরের নাম্বার নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করলে একপর্যায়ে খুঁজে পাওয়া যায় নওশাদের অভিভাবককে। তাঁরা এসে শিশুটিকে নিয়ে যান। দীর্ঘ ৫৩ দিন ছেলেটি তার পরিবারকে ফিরে পায়। ছেলেটির বাড়ি গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানার হায়দ্রাবাদ গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে।
ডা. শাহরিয়ার তাহমিদ ফয়সাল বলেন, ‘শিশুটি শুধু তার নাম এবং হায়দ্রাবাদ মাদ্রাসা এটুকুই বলতে পারছিল। আমার তখন আইডিয়াটা মাথায় আসে। সবার সহযোগিতায় কাজটি করতে পেরে খুব শান্তি লাগছে। মাকে খুঁজে পাওয়ার পর শিশুটির কান্না দেখে আমার চোখেও পানি চলে আসে। ওর মা-বাবা আমাদের অনেক দোয়া করেছেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!’
সান নিউজ/এমকেএইচ