নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশাল জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের নেতাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে অপরাংশ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। এ দাবিতে অভ্যন্তরীণ ৩১ রুটসহ দূরপাল্লার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তারা। এর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে বাস মালিক সমিতি।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল সোয়া ১০টায় রূপাতলী, নথুল্লাবাদ থেকে অভ্যন্তরীণ এবং ঢাকাসহ সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে করে লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিনে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। অনেকে হেটে গন্তব্যে পৌঁছাতে চেষ্টা করছেন।
আন্দোলনকারী শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সুলতান মাহমুদসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী গ্রেফতার না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুপাতলী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন।
তিনি বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহামুদ তার লোকজন নিয়ে বৃহস্পতিবার শ্রমিক ইউনিয়নের নবগঠিত কমিটির নেতাদের মারধর করেন। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিলে পুলিশের আশ্বাসে বাস চলাচল স্বাভাবিক করে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুলতান মাহামুদসহ সকলকে গ্রেফতারে আলটিমেটাম দেয় তারা। পুলিশও আশ্বস্ত করেছিল সুলতান মাহমুদকে গ্রেফতার করবেন। কিন্তু তাকে গ্রেফতার না করায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আবারো আন্দোলনে নেমেছেন।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, বাস মালিক নেতা ও শ্রমিক নেতাদের মারধরের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয়েছে। যতক্ষণ হামলাকারীদের গ্রেফতার না করা হবে ততক্ষণে এই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলা দায়েরের পর পরই জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ এলাকা ছেড়ে গেছেন। তার বাড়িতে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তিনি মুঠোফোনে জানিয়েছেন, রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে যারা শ্রমিক নন তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন মাননীয় মেয়র মহোদয়। শ্রমিক সংগঠনের নীতিমালা অনুসারে শ্রমিক না হলে তিনি শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটিতে থাকতে পারবেন না। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নের নামে একটি অবৈধ কমিটি গঠন করে পরিমল চন্দ্র দাস ও আহমেদ শাহরিয়ার বাবু রূপাতলী বাস টার্মিনালের নিয়ন্ত্রণ নিতে এই জনভোগান্তি সৃষ্টি করছেন।
সুলতান মাহমুদ বলেন, মামলায় আসামি করা হয়েছে আমাকে। যখন স্ট্যান্ডে মারামারি হচ্ছিল তখন আমি ঘরে বসে কোরআন শরীফ পড়ছিলাম। তাহলে আমি আসামি হই কি করে? আন্দোলন ও মারামারির ঘটনা তাদের পূর্ব পরিকল্পিত। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাজ করেছেন তারা। প্রকৃতপক্ষে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আমি ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম টিটু। আমাদের কমিটি শ্রম মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদিত।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সাননিউজ/এমএইচ