নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট : প্রতিবছর মড়কের কারনে প্রচুর পরিমাণ মাছ মারা যায়। এতে মৎস্য উৎপাদন কমার পাশাপাশি মৎস্য চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবার মাছের মড়করোধে ভ্যাকসিন আবিস্কারের দাবি করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)।
মাছের মড়ক থেকে রেহাই পেতে প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার উপযোগী মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছেন সিকৃবির মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের মৎস্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। গবেষণায় দেখা গেছে বায়োফ্লিম নামে ভ্যাকসিনটি স্বাদুপানিতে চাষকৃত মাছের এরোমোনাস হাইড্রোফিলা (Aeromonas hydrophila) নামক ব্যাকটেরিয়াজনিত ক্ষত, আলসার, পাখনা ও লেজ পচা রোগ-প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, চিলিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১৮ প্রজাতির মাছে ২৮ ধরনের ভ্যাকসিন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এই ভ্যাকসিন মৎস্য চাষে নব দিগন্তের সূচনা করবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের। মূলত স্বাদুপানির বিভিন্ন মাছসহ পাঙ্গাস মাছের ব্যাকটেরিয়া জনিত মড়করোধে এই বায়োফ্লিন ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবন হয়েছে।
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ভ্যাকসিন খাওয়ানোর পর মাছের প্রত্যাশিত মড়করোধ করা সম্ভব। বায়োফ্লিম একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত ভ্যাকসিন যা, প্ল্যাক্টোনিক ব্যকটেরিয়াকে ল্যাবরেটরিতে বায়োফ্লিম পর্যায়ে নেওয়ার মাধ্যমে অনুজীবের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
গবেষক ড. মামুন জানান, পাঙ্গাস মাছের ওপর গবেষণা করে ভ্যাকসিনটি উদ্ভাবন করা হলেও ভ্যাকসিনটি স্বাদুপানিতে চাষযোগ্য ইন্ডিয়ান মেজর কার্প যেমন রুই, কাতলা, কই, শিং প্রভৃতি মাছের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। প্রথমে গবেষণাগারে তৈরিকৃত বায়োফ্লিম ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট মাত্রায় মাছের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে খাওয়াতে হবে।
পাঙ্গাস মাছের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি শতকরা ৮৪ শতাংশ কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। অচিরেই ভ্যাকসিনটি নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা হলে দেশীয় বাজারে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া সম্ভব হবে।
সান নিউজ/এসএ