নিজস্ব প্রতিনিধি, বান্দরবান : বান্দরবানে পাহাড়ি পল্লীতে মাইকিং এর মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করে ভুয়া ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে বালাঘাটা বাজারের আল-হেরা নামে ওষুধের ফার্মেসির মালিক ও এক ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
এ ফার্মেসির মালিক ও ডাক্তার যোগসাজশে বান্দরবানের বিভিন্ন পাহাড়ি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত রিমোট এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা ভাড়া করে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা সেবা প্রদানের এমন প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. জসিম উদ্দিন এর নিজস্ব ফেসবুক থেকে একটি জনসচেতনতামূলক পোস্টের পর থেকে শহরের বালাঘাটা বাজার ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকার জনসাধারণের মাঝে এ ভুয়া ডাক্তারের বিষয়ে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা গেছে, বান্দরবান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বালাঘাটা বাজারের আল-হেরা নামে এই নতুন ঔর্ষধদের ফার্মেসিতে জেলার পার্শ্ববর্তী সাতকানিয়া ও চকরিয়া উপজেলা হতে বিতাড়িত ভুয়া ডাক্তার মো. আব্দুর রাশিদ (সরকার) আল-হেরা নামে ওই ওষুধের ফার্মেসিতে নাক, কান, গলা, হেড-নেক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন পরিচয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণার করে আসছে। এই ফার্মেসিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নাকের পলিপ, সুন্নতে খতনা, টিউমার, জন্মগত ঠোঁট কাটা, টনসিল অপারেশন করে রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টি জানতে চাইলে আল-হেরা ওষুধের ফার্মেসি মালিক মহিউদ্দিন বলেন, ডাক্তার আব্দুর রশিদের বায়োডাটার ফটোকপি আমি’সহ গিয়ে বান্দরবান সিভিল কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। ওই ডাক্তার আমার ফার্মেসিতে করোনার আগে ও পরে নিয়মিত বসে আসছে। তিনি ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসের দিকে নিয়মিত রোগী দেখবেন। তবে ডাক্তার ভুয়া কিনা এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
বিষয়টি জানতে চাইলে ডাক্তার আব্দুর রশিদ (সরকার) মুঠোফোনে বলেন, আমি সশরীরে সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে কাগজপত্রগুলো জমা দিয়েছিলাম। তবে তাৎক্ষণিক আমার হাতে কাগজপত্রের অরিজিনাল কপিগুলো না থাকায় পরবর্তী জমা দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু আমি মুন্সীগঞ্জে আরেকটি এনজিওতে চাকরিতে জয়েন করায় অরিজিনাল কাগজপত্রগুলো নিয়ে আসতে পারি নাই। আমি আসল কিনা ভুয়া জানতে চাইলে আপনারা বিএমডিসি ওয়েবসাইটে সার্চ করে জানতে পারেন বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ওই ডাক্তার বরিশাল মেডিকেল কলেজের কথা বললেও মেডিকেল কলেজে আমরা খবর নিয়েছি সেখানে ওই ডাক্তারকে কেউ চিনে না। সে হয়তো বরিশাল মেডিকেল কলেজের কোন ডাক্তারের চেহারার সাথে মিল আছে এমন একজনের সার্টিফিকেটগুলো জাল করে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় চেম্বার করে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। আমাদের কাছে দেওয়া কাগজপত্রগুলো সন্দেহ হওয়ায় অরজিনাল কপি দেখানোর কথা বলেছি। পরবর্তীতে সে কাগজপত্রগুলো দেখাতে আর আসে নাই।
বরিশাল মেডিকেল কলেজের গ্রুপে তার কাগজপত্রগুলো ফটোকপি আমরা দিয়েছি ওখানেও তাকে কেউ চিনলো না।
সান নিউজ/এমএআর/কেটি