নিজস্ব প্রতিনিধি, শরীয়তপুর: নড়িয়া উপজেলার তেলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী দ্বিতীয় বার অপহরণের ২ মাস ১০ দিন পরেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এরপূর্বে ও অপহরণের ৪ মাস পরে উদ্ধার করা হয়েছিল। ফলে পরিবারে মারাত্মক হতাশা বিরাজ করছে। ছাত্রীর মা মেয়েকে হন্য হয়ে খুঁজে ও কুলকিনার করতে পারছেন না। সারাদিন মেয়ের জন্য আহাজারি করছে।
অপহৃতা স্কুলছাত্রী মা মামলার বাদিনী জোৎসনা বেগম জানান, গত মার্চ মাসের ১৫ তারিখে তেলিপাড়া গ্রামের ইতালী প্রবাসী আ. সাত্তার ছৈয়ালের কন্যা তেলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রি পপি আকতার (১৫) সকাল অনুমান ৯টায় স্কুলে যাওয়ার পথে জাহাঙ্গীর সরদারের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর সরদারের বখাটে ছেলে রিয়াদ সরদার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে জোরপূর্বক অটোবাইকে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা জোৎসনা বাদী হয়ে নড়িয়া থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস পরে পুলিশ মেয়েকে উদ্ধার করে আদালতে হাজির করলে আদালতের মাধ্যমে মায়ের জিম্বায় দেয়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এমত অবস্থায় স্কুলছাত্রী করোনা চলাকালীন সময়ে অনলাইনে পরীক্ষা দিয়ে গত ১৭ অক্টোবর পরীক্ষার উত্তরপত্র নিয়ে তেলিপাড়া জাহাঙ্গীর সরদারের বাড়ির সামনে দিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সকাল অনুমান সোয়া ১০টায় জাহাঙ্গীর সরদার ও তার স্ত্রী ফাহিমা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছাত্রিকে গতিরোধ করে কথা শুনতে বলে। হঠাৎ করে জাহাঙ্গীর সরদারের ছেলে রিয়াদ সরদার এসে একটি অটোবাইকে করে জোরপূর্বক স্কুল ছাত্রী পপি আকতারকে পুনরায় অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ছাত্রীর মা অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ কে অবহিত করে।
অবশেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল এর সহায়তায় নড়িয়া থানায় একটি নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১ মাস পরে গত ১৭ নভেম্বর রিয়াদ সরদার ও তার বাবা মাসহ ৪ জনকে আসামি করে নড়িয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। অপহরণের ২ মাস ১০ দিন পরেও পুলিশ অপহৃতা স্কুলছাত্রী পপি আকতারকে উদ্ধার করতে পারেনি। মেয়েকে উদ্ধার করতে না পেরে পরিবারে মারাত্মক হতাশা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে ছাত্রীর মামা বিল্লাল বেপারী বলেন, জাহাঙ্গীর সরদারের সহযোগিতায় তার বখাটে ছেলে রিয়াদ আমার ভাগ্নিকে অপরণ করে নিয়ে গেছে। এরপূর্বে ও একবার নিয়ে যায়। গত ২ মাস ১০ দিনেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ও আমার ভাগ্নিকে ফেরত চাই।
চামটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন রাঢ়ি বলেন, আমাকে মাদারীপুরের র্যাব ক্যাম্পের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুরাহার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি পারিনি। ছেলের পক্ষের কোন লোকজনকে বাড়ি পাইনি।
নড়িয়া থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এর পূর্বে ও একবার অপহরণ হয়েছিল। আমরা অনেক চেষ্টা করে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে মায়ের কাছে জিম্বায় দিয়েছি। আবার অপহরণ হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ অপহৃতা ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
সান নিউজ/কেটি