ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় জায়ান রহমান (৭) নামে এক গ্রীস প্রবাসীর সন্তানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে মো. ইউনুচ মোল্লা (৪৬) নামে এক প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঝুলন্ত মরদেহে ব্যবহৃত এক রশির সূত্র ধরেই ইউনুচকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শাহজালাল আলম।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ইউনুচ মোল্লাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে গত সোমবার অভিযুক্ত ইউনুচকে নিজ বাড়ি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়। গ্রেপ্তারকৃত ইউনুচ মোল্লা নিহত শিশু জায়ানের বাড়ির পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের মৃত মনির উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
থানা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের গ্রীস প্রবাসী পলাশ মোল্লার ছেলে জায়ান রহমানের ঝুলন্ত মরদেহ বাড়ির পাশের একটি বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই নিহতের মা সিনথিয়া বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হয়ে ওঠে শিশুটির ঝুলন্ত একটি রশি।
পুলিশ ওই রশির আলামত ধরে তদন্তে অগ্রসর হতে থাকে এবং পাশের টাবনী বাজারের একটি মুদি দোকান থেকে রশিটি ক্রয়ের তথ্য পায়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে শিশু জায়ানের প্রতিবেশী মো. ইউনুচ মোল্লা টাবনী বাজারের মুদি দোকানি মফিজ খানের কাছ থেকে একটি রশি কিনেছিলেন। সেই রশির সঙ্গে উদ্ধার হওয়া রশির হুবহু মিল রয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতেই ইউনুচ মোল্লাকে সন্দেহের তালিকায় এনে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রশি ক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
পুলিশের দাবি, এই অস্বীকারের ফলেই তাদের সন্দেহ আরও জোরালো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলফাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক সুজন বিশ্বাস জানান, গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাকে কারাগারে গ্রেপ্তার রেখে মামলার নিবিড় তদন্ত পরিচালনার স্বার্থে এবং হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য আগামীকাল বুধবার আদালতে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম বলেন, “ঘটনার সঙ্গে কিছুটা সম্পৃক্ততা ও রশি কেনার বিষয়ে মিথ্যা বলার কারণে সন্দেহের সৃষ্টি হওয়ায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
সাননিউজ/আরপি