নোয়াখালীর চাটখিলে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা গণধর্ষণ মামলায় ফাঁসানো ও পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালে জেলা শহর মাইজদীর একটি রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী নাজমুল আলম নাঈমের মা নাজমা আক্তার। নাজমুল আলম নাঈম (২২) চাটখিল উপজেলার পুরুষোত্তমপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
লিখিত বক্তব্যে নাজমা আক্তার অভিযোগ করেন, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ছেলে নাঈম চাটখিল মেডিনোভা জেনারেল হাসপাতালে চাকরি করে সংসার চালিয়ে আসছে। অপরদিকে, আসমা আক্তার (২৭) তার ছেলের সাথে একই হাসপাতালে চাকরি করত। সেই সুবাদে তারা একে অপরকে চিনত। চেনাজানার মধ্যে বিবাহিতা আসমা আক্তার তার ছেলেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। ছেলে তার প্রেমের প্রস্তাব নাকচ করায় আসমা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চাকরিচ্যুত করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে গত ২৫ আগস্ট আসমা তার সংসার টিকিয়ে রাখতে তার কিশোরী ছোট বোনের (১৩) পক্ষে উকিল সাজিয়ে ভুয়া নিকাহনামা তৈরি করে। পরে কাজী অফিসে গিয়ে ওই নিকাহনামার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৭ নম্বর আমলি আদালতে সিআর মামলা নং–৩৮২/২০২৫ দিয়ে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন।
নাজমা আক্তার আরও জানান, মামলা দায়েরের পর নাঈম আদালতে হাজির হয়ে ভুয়া নিকাহনামা ও প্রত্যয়নপত্র দাখিল করে জামিন চাইলে বিচারক তাকে জামিন দেন। একই সঙ্গে কাজী মো. আব্দুল কুদ্দুছকে নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। পরে আদালতে কিশোরীর সেই নিকাহনামা ভুয়া প্রমাণিত হয়।
গত ১৭ অক্টোবর আদালত থেকে দুই বোন বাড়িতে গিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করে। নাজমা আক্তারের দাবি, কিশোরী বোন নিজ হাতে নিজেকে আঘাত করে চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এ ঘটনার এক মাস পর গত ১৮ নভেম্বর নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে গণধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলায় হাসপাতালের ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বাবুকে ১ নম্বর আসামি ও তার ছেলে নাঈমকে ৩ নম্বর আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দেন আসমা আক্তার। এতে পুলিশি হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ছেলের ভবিষ্যৎ বিপন্ন বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচারের আবেদন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাজমা আক্তারের মুঠোফোনে কল করা হলে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে এ বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দিন চৌধুরী পুলিশি হয়রানির অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বিষয়টি তার পুরোপুরি জানা নেই।
সাননিউজ/আরপি