নোয়াখালীর সেনবাগে মিজানুর রহমান আশরাফুল নামে এক শিশুকে চকলেট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যার পর পাশ্ববর্তী ধানক্ষেতে পুতে রাখার অভিযোগে শিশুটির মায়ের পূর্বের স্বামী ও তার সহযোগীসহ দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মুহাম্মদ মোরশেদ ইমতিয়াজ এ রায় প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে নগদ ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নজরপুর গ্রামে ২০২১ সালের ২ এপ্রিল শিশু মিজানুর রহমান আশরাফুলকে (৬) পারিবারিক কলহের জেরে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি—শিশুর মা পান্না আকতারের পূর্বের স্বামী—বাড়ি থেকে চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নেয়। এরপর পাশ্ববর্তী আবদুল হাকিমের ধানক্ষেতে নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ক্ষেতের মধ্যে পুতে রাখে। তিন দিন পর ধানক্ষেতে একটি শিশুর অর্ধগলিত লাশ থাকার খবর পেয়ে ভিকটিমের পিতা আবুল কাশেম গিয়ে তার ছেলের লাশ সনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় তিনি ৬ এপ্রিল সেনবাগ থানায় সন্দেহভাজন ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে সেনবাগ থানা পুলিশ ঘটনার ক্লু উদ্ঘাটন করে। ঘটনায় অভিযুক্ত আবুল কাশেমের স্ত্রীর পূর্বের স্বামী আলাউদ্দিন (৪০) ও তার সহযোগী আবদুল্লাহ হাসান আল মামুন (৩৪) স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
দীর্ঘ শুনানির পর নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ ড. মুহাম্মদ মোরশেদ ইমতিয়াজ অভিযুক্ত ২ জনকে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আলাউদ্দিন ও আবদুল্লাহ হাসান আল মামুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নোয়াখালী জেলা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মীর হোসেন।
সাননিউজ/আরপি